শ্রীলঙ্কা সফরে বাজে হারে শুরু করেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৯১ রানের বড় ব্যবধানে হার। যদিও বিশ্বকাপের পর নিয়মিত কোচ ও বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার ছাড়া এই সফর করেছে টাইগাররা। তবে পরের ম্যাচে জিতে সিরিজ সমতায় ফেরার আশা প্রকাশ করেছেন হেড কোচের দায়িত্ব পালন করা খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলছেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, কামব্যাক করবই।
রোববার একই ভেন্যু কলম্বোয় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
শুক্রবার ম্যাচের পর শনিবার দলের কোনো অনুশীলন ছিল না। তবে মাশরাফীর ইনজুরির কারণে নেতৃত্বে থাকা তামিম ইকবালসহ কয়েকজন অনুশীলন করেন।
প্রথম ম্যাচ হারা ও দ্বিতীয় ম্যাচ নিয়ে সাংবাদিকদের সুজন বলেন, ‘ম্যাচ হারলে কারোরই ভালো লাগে না, ছেলেদেরও তেমনি ভালো লাগেনি। তবে আমাদের সুযোগ আছে। একটা ম্যাচ শেষ হয়েছে, আরও দুটি ম্যাচ বাকি আছে। অবশ্যই আমরা আগামীকালের (রোববার) ম্যাচটা জিততে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের যোগ্যতা না থাকলে আমি উত্তরাটা দিতাম না। ইনশাআল্লাহ আমরা সিরিজে ফিরবো।’
এদিকে দ্বিতীয় ম্যাচে দলের একাদশে পরিবর্তন নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে সুজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সেরা একাদশটা বাছাই করেছি। আমি মনে করি, এই ছেলেরাই আরও ভালো করতে পারে। পরিবর্তনের কথাটা আমরা এখনো চিন্তা করিনি। সবসময় পরিবর্তন যে ভালো হয় তা নয়, আবার ভালোও হয়। প্রথম ম্যাচে আমরা এটাকেই সেরা দল হিসেবে ভেবেছি এবং এই দলে বিশ্বাস রাখতে চাই।’
প্রথম ম্যাচের ঘাটতির জায়গাগুলোও চিহ্নিত করেন সুজন। বলেন, ‘আমরা বোলিংও ভালো করিনি, ব্যাটিংও ভালো করিনি। দুই ক্ষেত্রেই আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। তবে পজিটিভ জায়গাও আছে। একটা সময় মনে হয়েছিল, ওরা (শ্রীলঙ্কা) ৩৬০ বা ৩৭০ রান করবে। শেষ পর্যন্ত সেটা বোলাররা হতে দেয়নি। এটা একটা পজিটিভ দিক।’
শুক্রবার বাংলাদেশকে হতাশ করেছেন দুই ওপেনারই। তবে সুজন পাশেই থাকছেন তাদের, ‘আমাদের ব্যাটিংটা ভালো হয়নি। তামিম ভালো খেলেননি। তবে মালিঙ্গার দুটি সেরা ইয়র্কার ডেলিভারিতেই আউট হয়েছেন তামিম-সৌম্য। এটা হতেই পারে। তারপরও যদি আমরা আরেকটু বেশি দায়িত্ব নিতে পারতাম, তাহলে আমরা ম্যাচেই ছিলাম। যাইহোক, পরের ম্যাচে যদি এই জায়গাগুলো ঠিক করতে পারি, তাহলে অবশ্যই ভালো করব।’
বাংলাদেশ কোচ আফসোস করেন বড় আরেকটা জুটি না হওয়ারও, ‘শেষ ২০ ওভারে আমাদের দরকার ছিল ১৫৫ রান। কিন্তু মুশফিক ও সাব্বিরের জুটিটা যদি আরও বড় হত বা পরে কেউ যদি আরেকটা ভালো জুটি গড়তে পারতেন, তাহলে ভালো কিছুই হতে পারত। তারপরও বলব, আমরা ভুল থেকে শিখছি, আমাদের সক্ষমতা আছে, আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’
বিশ্বকাপ থেকেই দৃষ্টিকটু ফিল্ডিং করছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও সেটা বড় করে দেখা দিল। বাজে ফিল্ডিং নিজে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় খালেদ মাহমুদকেও। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে টেকনিক্যাল কোনো ব্যাপার না। এটা হল সংযোগের ব্যাপার। প্রতিপক্ষ যখন আমাদের ওপর ডমিনেট করে, তখন আমরা একটু ঘাবড়ে যাই। কিন্তু সেটা না করে বলের সঙ্গে একটু বেশি সংযোগ স্থাপন করে নিতেই পারলেই হয়। আমরা বেশ কিছু মিস ফিল্ডিং যে করেছি এটা আমি স্বীকার করছি। তবে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, আমরা কামব্যাক করব।’
শ্রীলঙ্কার মাটিতে এখনো পর্যন্ত সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। তবে বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্সের পর এবার অনেকেই আশা করেছিল এই দফায় হয়ে যাবে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে হেরে সেটা কী শেষ? সুজন বলছেন, ‘আগে তো কালের (রোববার) ম্যাচটা জিতি, তারপর বলব। প্রথম ম্যাচ হেরেছি বলে সবশেষ হয়নি, কালকের ম্যাচটা যদি জিততে পারি, তাহলে আমাদের সুযোগ থাকছেই। শ্রীলঙ্কার মাটি সবসময়ই কঠিন, তবে এমন কঠিন না যে, তা অতিক্রম করা যাবে না। বাংলাদেশের এই দলটারই সেই সক্ষমতা আছে অতিক্রম করার।’