দেশে উচ্চশিক্ষার ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও জনসংখ্যার অনুপাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নবাগত শিক্ষার্থীদের প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। উচ্চশিক্ষা প্রসারের কথা বিবেচনা রেখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে চাহিদার অনুপাতে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক বা বিডিরেনের মাধ্যমে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাই-স্পিড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি প্রদান করা হচ্ছে। বিডিরেনকে ট্রান্স-ইউরেশিয়া ইনফরমেশন নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করে বিশ্ব জ্ঞান ভাণ্ডারের সঙ্গে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার গুণগত মান অর্জনের দিকেও নজর দিতে হবে। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে ও ইউজিসি’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্প, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি, শুদ্ধাচার প্রয়োগ কৌশল ইত্যাদি।
প্রধান অতিথির ভাষণে উপস্থিত নবীন শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার দ্বারপ্রান্তে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সার্টিফিকেট সর্বস্ব ডিগ্রিধারী না হয়ে প্রকৃত শিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। বিদ্যমান সকল অন্ধকারের বন্ধ দুয়ার খুলে আপন প্রতিভা ও মেধার জাদুকরি শক্তিতে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সকল সমস্যা নিরসনে তোমাদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের জ্ঞানার্জন এবং গবেষণা করুক। অপরাজনীতি, নেশাসক্তি শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশের দ্বার রুদ্ধ করে দিতে পারে। তারা এসবে যুক্ত হলে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ মানব সম্পদ এবং নেতৃত্ব গড়ে উঠবে না। এতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
উপাচার্য বলেন, ক্লাশ শুরুর প্রথম পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আবাসন-সমস্যার মুখোমুখি হলেও তা সাময়িক সমস্যামাত্র। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে তাদের আবাসন ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। ১২শ’ কোটিরও অধিক ব্যয়সংবলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের জন্য বিশেষ প্রকল্প শীর্ষক নতুন একটি প্রকল্প ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা কমিশনে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পটি সরকারের প্রি-একনেক প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শিক্ষা ও আবাসন ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে এবং সমস্যা লাঘব হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার ও প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন’সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।