জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদে নতুন দুই ভারপ্রাপ্ত ডিন নিয়োগের প্রতিবাদে আল্টিমেটাম দিয়েছে উপাচার্যবিরোধী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন করে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’।
সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদের ডিন নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে উপাচার্যের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা ও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি ও সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক আবুল হোসেন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় দুটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের নির্বাচিত ডিন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আমির হোসেনকে এবং আইন অনুষদের নিয়োগপ্রাপ্ত ডিন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হককে ডিন পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’
“ভর্তি পরীক্ষার জন্য উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ হবার পরও তাদের দুজন ডিনের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়নি। তাহলে কেন রাতের অন্ধকারে তাদের অব্যাহতি দেয়া হলো?”
আবুল হোসেন বলেন, ‘প্রথা অনুযায়ী নির্বাচিত ডিন পদত্যাগ করেন। কিন্তু তাকে অব্যাহতি দেয়ার নজির নেই। সমাজবিজ্ঞান অনুষদে বহু পদে আসীন থাকায় ইতোমধ্যে বিতর্কিত অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতারকে তল্পিবাহক ডিন হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আবার আইন অনুষদে সহকারী অধ্যাপক রবিউল ইসলামের পদন্নোতি আটকে রেখে তার ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে অধ্যাপক বশির আহমেদকে ডিন পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’
সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যপক ড. ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে অধ্যাপক ড. আমির হোসেনের মতো একজন সম্মানিত ও নির্বাচিত ডিনকে এভাবে অব্যাহতি দেয়া নীতিবিরুদ্ধ ও অনৈতিক। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে সুযোগ থাকার পরেও অন্য বিভাগ থেকে ডিন নিয়োগ দেয়া শুধুই স্বজনপ্রীতির বহিঃপ্রকাশ।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ, অধ্যাপক শাহেদুর রশিদ, অধ্যাপক আওলাদ হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক হোসেন আরা, ড. মুহম্মদ ছায়েদুর রহমান, নাজমুল হাসান তালুকদার, জনাব শাহজাহান প্রমুখ।
বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আখতারকে ও আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে অধ্যাপক বশির আহমেদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই দুই শিক্ষক পূর্বে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর প্রতিনিধি ছিলেন।
উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক সমাজ’ নামের নতুন প্যানেল গড়ে তোলেন।
গত গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বশির আহমেদ সাধারণ সম্পাদক এবং রাশেদা আখতার সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।