চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

দীনতার ফুটবলে আরেকটি জর্ডান-লজ্জা

এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু! নিশ্চয়ই আজ আর কেউ এই প্রার্থনা করবেন না। অন্ধকারে ডুবতে থাকা ফুটবলে এমন পরিস্থিতি দেখতে দেখতে দেশের মানুষের সয়ে যাওয়ার কথা। যে জর্ডান শেষ দুই দেখায় ১২ গোল দিয়েছিল এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইয়ে বুধবার তারা সাতটি দিয়েছে!

এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু!

ফুটবলারদের ক্লান্ত পা দেখে এই একটি বাক্যই এদিন বারবার মাথায় এসেছে। নিজেদের অর্ধে জর্ডানের ছয়/সাত জন। ইচ্ছে মতো পাস করছেন, বক্সে ঢুকছেন, গোল করছেন; ঠেকানোর কেউ নেই।

কাতার থেকে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ১২ ঘণ্টার ভ্রমণক্লান্তি নিয়ে প্যালেস্টাইন পৌছায় বাংলাদেশ। মাঠের খেলায় সেই ক্লান্তি ফুটেছে বাস্তবতার ফুল হয়ে। প্রথমার্ধে দুই গোল, দ্বিতীয়ার্ধে ৫টি। শেষদিকে মনে হয়েছে কেউ আর বলে লাথিই মারতে পারবেন না।

বাংলাদেশ গ্রুপ ‘ই’তে। দ্বিতীয় ম্যাচ তাজিকিস্তানের বিপক্ষে, ২১ জুলাই। ২৩ জুলাই দেখা হবে স্বাগতিক প্যালেস্টাইনের বিপক্ষে।

প্রতিবেশী ভারত, মালদ্বীপ এমন কী নেপালও ফুটবলে দিনকে দিন উন্নতি করছে। অথচ বাংলাদেশের কেন এই অবস্থা?

এই প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। ঘরোয়া ফুটবলে দর্শক নেই, তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তুলে আনার দৃশ্যমান কোনো পরিকল্পনা নেই। কিছুদিন আগে অখ্যাত এক অর্ডকে কোচ করে আনা হয়েছে। তিন সপ্তাহ কোচিং করিয়েছেন। নেপাল, কাতারে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন। আসল লড়াইয়ে গতিময় ফুটবল খেলা জর্ডানের বিপক্ষে তার ছেলেদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশকে এদিন গতিতে নাকানিচুবানি খাইয়েছেন স্ট্রাইকার মউসা মোহাম্মদ। ডান কোনা দিয়ে মিনিটে মিনিটে বল নিয়ে ঢুকছিলেন। ১৪তম মিনিটে তিনিই গোল উৎসবের শুরু করেন। ৩৭তম মিনিটে নুর আল দ্বীন মাহমুদ দ্বিতীয় গোল করেন। এই অবস্থায় বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ যাচ্ছেতাই ফুটবল খেলেছে। ৫০তম মিনিটে মউসা নিজের দ্বিতীয় গোল এবং দলের হয়ে তৃতীয় গোল করে বাংলাদেশকে ব্যাকফুঠে ঠেলে দেন। বক্সের ভেতর থেকে বাপায়ের মাটি কামড়ানো শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। ৫৪ মিনিটের সময় বক্সের ডান কোনা থেকে ক্ষিপ্র গতিতে বল নিয়ে ভেতরে ঢোকেন ওই মউসা। টোকা দিয়ে বল দেন আহমদ মাহমুদকে। বক্সের ভেতর থেকে দেখেশুনে বল জালে জড়ান তিনি। ৫৮তম মিনিটে দলীয় অধিনায়ক ফয়সাল পঞ্চম গোল করেন। ৬৩ মিনিটের সময় নুর আল দ্বীন ষষ্ট গোল করেন। বাঁদিক থেকে আসা ফ্রি-কিকে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের সামনে থেকে মাথা দেন। কেউ চার্জ পর্যন্ত করতে যাননি।

৭৯তম মিনিটে আহমেদ মাহমুদ পেনাল্টি থেকে সপ্তম গোল করেন। শেষদিকে জর্ডান শুরুর মতো মনোযোগ দিয়ে খেললে গোল হতে পারতো গোটা দশেক! সেটা না হলেও অর্ডের ছেলেরা ঠিকই মনে মনে বলেছেন, এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু!