অভিনেতা, নির্দেশক ও নাট্যকার আশীষ খন্দকার। তবে এসব পরিচয় ছাপিয়ে নিজেকে শিল্পী বলাতেই স্বাচ্ছ্যন্দ তার। ডিগ্রি অর্জন করেছেন দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি) থেকে। সম্প্রতি তার একটি লুক ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যার সূত্র ধরেই বিভিন্ন চলচ্চিত্র গ্রুপে প্রশংসিত হচ্ছেন ‘চাকা’ খ্যাত এই দাপুটে অভিনেতা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল আশীষ খন্দকার অভিনীত এই স্থিরচিত্রটি সৈকত নাসিরের নির্মিতব্য ছবি ‘বর্ডার’ এর। চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মানুষদের জীবনযাত্রা ও ওই অঞ্চলের চোরাচালান নিয়ে নির্মিত হচ্ছে বলে জানান সৈকত নাসির।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি জানালেন, ১৯ দিন দেশের বিভিন্ন লোকেশনে শুটিংয়ে ছবির কাজ শেষ করেছেন।
এদিকে ‘বর্ডার’ এর মতো চলচ্চিত্রে কীভাবে যুক্ত হলে ‘বাথান’ খ্যাত নির্মাতা-অভিনেতা? আশীষ খন্দকারের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘সৈকত নাসির যে স্ক্রিপ্টটা করিয়েছেন, সেটাকে বলা যায় ‘ক্লাসিক্যাল ব্লেন্ডেড উইথ দ্য কর্পোরোটিজম ফর্মুলা’। স্ক্রিপ্টটা দেখে মনে হয়েছে, এই ছবিটি হতে পারে ‘দ্য গডফাদার’, ‘সিটি অব গড’ লেভেলের! জনরা একই হলেও ‘বর্ডার’ এর গল্পটা একেবারে আমাদের প্রেক্ষাপটে। এক কথায় বললে আমি বলবো, ‘বর্ডার’ এর স্টোরি টেলিংটা দেখেই আমি এই ছবিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই।
ছবির মূল গল্প কিংবা নিজের চরিত্র নিয়ে বলতে না চাইলেও ‘কালের পুতুল’ এর এই অভিনেতা বলেন, বাংলা মানেই সুজলা সফলা নদী ঘেরা একটা ব্যাপার! কিন্তু বাংলার আসল চেহারাতো বোম্বে কিংবা সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্মের মতোই! প্রতিদিন যেখানে ক্রিমিনোলজি ডেভেলপ করছে। ছবির কাজ এখনও বাকি, পোস্ট প্রোডাকশন বাকি- শুধু এটুকু বলি, এটা সত্যিই একটা সাহসী কাজ হবে সৈকতের এবং এটাতে আন্তর্জাতিকতাবাদের গন্ধ আমি পেয়েছি। অভিনেতা হিসেবে আমি আমার জায়গা থেকে ঠিকঠাক দেয়ার চেষ্টা করেছি। আন্তর্জাতিক ক্লাসিক্যাল ফিল্মগুলোকে আমি রেফারেন্স হিসেবে নিয়েছি।
‘বর্ডার’ ছাড়াও সম্প্রতি নির্মাতা নূরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ছবিতে অভিনয় করেছেন আশীষ খন্দকার। এই ছবিটিকে এই অভিনেতা বলছেন ‘একাত্তরের আনকনভেশনাল গল্প’। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো প্রায় সবই একই রকম। খুব গৎবাধা একটা ব্যাপার দাঁড়িয়েছে, কিন্তু ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ একাত্তরের গল্প হলেও ভিন্ন কিছু দেখাবে দর্শককে। আমি এই ছবিতে যে চরিত্রটি করেছি- তিনি ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে বেড়ান। একাত্তরে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে যার ঘোড়ার গাড়িটি লাশ বহন করে।
আশীষ খন্দকারকে ‘বর্ডার’ এ কাস্ট করা প্রসঙ্গে সৈকত নাসির বলেন, তার (আশীষ খন্দকার) সঙ্গে মিটিংয়ে বসার আগেই বলেছেন, গৎবাঁধা সিনেমার গল্প বা চরিত্রে কাজ করেন না। গল্পের প্লট এবং চরিত্র শুনে উনি মুগ্ধ হন। তারপর কাজ করতে রাজি হন। ভিলেনের যে ফরম্যাট সেটা নতুনভাবে আনার চেষ্টা করেছি।
পরিচালক সৈকত নাসির বলেন, ‘বর্ডার’ এ কিছুটা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছেন আশীষ খন্দকার। তিনি বলেন, তিনি এ ছবির অন্যতম চমক (সারপ্রাইজ)। কিছুটা আধ্যাত্মিক চরিত্রে তাকে দেখা যাবে। একটি এলাকায় তিনিই শেষ কথা! গল্পে চাহিদা ছিল এ চরিত্রের জন্য একজন শক্তিমান অভিনেতা।
পরিচালক সৈকত নাসির বলেন, আর মাত্র একদিন শুটিং করলেই পুরো কাজ শেষ হবে। ৮ তারিখ এফডিসিতে শুটিং করবো। ওইদিনই ক্যামেরা ক্লোজ হবে। সীমান্ত অঞ্চলে এমন কিছু ঘটনা যা দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছি যা লুফে নেবে। কাজটি করার আগে বিভিন্ন লোকেশনে গিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়েছি। বিভিন্ন কিছু স্টাডি করেছি।
ম্যাক্সিমাম এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে নির্মিতব্য ‘বর্ডার’ ছবিতে আশীষ খন্দকার ছাড়াও অভিনয় করেছেন সাঞ্জ জন, অধরা খান, মৌমিতা মৌ, ফারুক সুমন প্রমুখ।