দেশে চলমান বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি সংকটের মধ্যে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। লাগামহীন তেল ও নানা খাদ্যপণ্যের দাম। সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো একই অবস্থা বাংলাদেশেরও। যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতে যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বের বৈদেশিক মুদ্রার উপরে চরম চাপ পড়ে জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। কূটনৈতিক বৈরিতার প্রভাবে দেউলিয়া হবার পথে বহু দেশ। এরইমধ্যে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন সর্ম্পকে।
ইউক্রেন ও রাশিয়া শস্য রপ্তানি অবরোধ মুক্ত করতে এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট এড়াতে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আর ইউরোপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাশিয়ান গ্যাস পাইপলাইন পুনরায় চালু হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশটিতে আক্রমণের পর বিশ্বব্যাপী খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং বিশ্বের কয়েকটি দরিদ্র দেশের মানুষ অনাহারের মুখোমুখি হওয়ার পর প্রথম যুদ্ধরত দুটি পক্ষের মধ্যে এই বড় চুক্তি।
লড়াইরত ইউক্রেন এবং রাশিয়া ইউরোপের সবচেয়ে উর্বর অঞ্চল এবং বিশ্বের বৃহত্তম শস্য উৎপাদনকারী দেশ। ২৫ মিলিয়ন টন গম এবং অন্যান্য শস্য ইউক্রেনের বন্দরে রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ এবং ল্যান্ডমাইন দ্বারা অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আর এর স্পষ্ট প্রভাব পড়েছে সারাবিশ্বে। এই চুক্তির পরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হবে বলে আমাদের আশাবাদ।
তাছাড়া রাশিয়া বৃহস্পতিবার ১০ দিনের রক্ষণাবেক্ষণের পর নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনের মাধ্যমে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে। এটি বিশ্ববাজারের জন্য একটি সুখবর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং রাশিয়াকে একে সরল বিশ্বাসে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। এটিও একটি বড় অগ্রগতি।
জীবানু করোনাভাইরাস যে ভয়াবহ ক্ষতি পৃথিবীর বুকে রেখে গেছে, একইরকম ক্ষতি যেনো মানবসৃষ্ট কারণে আরও ভয়াবহ হয়ে না ওঠে, এই আমাদের প্রত্যাশা। বিশ্বজুড়ে দ্রুত শান্তির সুবাতাস বয়ে যাক, যুদ্ধ বন্ধ হয়ে দ্রুত উন্নতি হোক বিশ্ব অর্থনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি।