চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব: টিআইবি

দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তবে এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সহায়ক ভূমিকা রাখার বিষয়টিতে জোর দিয়েছে সংস্থাটি।

সোমবার রাজধানীতে টিআইবি’র কার্যালয়ে ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়েছে দাবি করে একজন সাংবাদিক নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করলে জবাব দেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক।

তিনি বলেন: আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা প্রবণতা আছে যে নির্বাচিত হতে না পারলে নির্বাচন-ফলাফলকে অগ্রহণযোগ্য বলে। এরকম প্রবণতায় আস্থাহীনতার সংকট তৈরি হয়েছে। এজন্য সকল রাজনৈতিক দল কম-বেশি দায়ী। বাস্তবতা হচ্ছে নিরপেক্ষ-নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পদ্ধতিটি সাংবিধানিকভাবে যেহেতু বাতিল হয়েছে সেহেতু আমাদের এখন বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। এখন সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় যে উপায় বৈধ সে উপায়ে নির্বাচন হতে হবে।

তবে এক্ষেত্রে আস্থাহীনতার সংকট রয়েছে এবং সেটা দূর করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন: আমরা আশা করতে পারি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা থাকবে। সেই শ্রদ্ধাবোধ থেকেই নির্বাচনে সবার জন্য সবাই মিলে সমান সুযোগ তৈরি করার দায়িত্বটা পালন করবেন। নির্বাচন শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন করে না। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখলে দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। এর পাশাপাশি গণমাধ্যম, নাগরিকসমাজসহ প্রত্যেক নাগরিকেরই খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত কার্যপত্রে বাংলাদেশের এযাবৎ নির্বাচনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর দেয়া সুশাসন ও শুদ্ধাচার বিষয়ক ইশতেহারগুলো তুলে ধরেন টিআইবি’র সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।

কার্যপত্রের ওপর ভিত্তি করে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন: আমরা দু’টি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ইশতেহারের দিকে। ১৭ টি লক্ষ্যমাত্রার ১৬তম লক্ষ্যমাত্রায় শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানের বিষয় রয়েছে। ১৬ নম্বরকে বাদ দিয়ে বাকী কোনটি লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ সম্ভব নয়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে শুদ্ধাচার। ২০১২ সালে প্রণীত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে ৮টি দলসহ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে শুদ্ধাচারের দিক নির্দেশনা রয়েছে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইশতেহারের প্রবণতা তুলে ধরে তিনি বলেন: আমরা মোটা দাগে দেখতে পাই বাংলাদেশে নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন ও সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন তুলনামূলকভাবে এখনো সুপ্রতিষ্ঠিত চর্চা হয়ে ওঠেনি। সাম্প্রতিক সময়ে দেখতে পাই দলগুলো ইশতেহারে সুশাসন,শুদ্ধাচারে, দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রাধান্য দেয়া শুরু করেছে। যদিও সর্ববৃহৎ, প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি আরেকটু প্রাচীন, আরেকটু সুপ্রতিষ্ঠিত বলে ধরে নেয়া যায়। আমরা দেখতে পাই সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা দুর্নীতি প্রতিরোধ, এধরনের বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে দলটির নির্বাচনী ইশতেহারে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।