একটা সময় ছিল যখন ভাল সিনেমা এলেই মানুষ প্রস্তুতি নিয়ে সপরিবার হলে গিয়ে সিনেমা দেখতেন। সিনেমা দেখে এসে অন্যের কাছে সেই ছবির গল্প আর ভাল লাগা নানা দৃশ্যের বর্ণনায় অনেকের দেখা হয়ে যেত অর্ধেক ছবি। তখন সিনেমা হলের বাইরে থাকত টিকেটের জন্য দর্শকের লম্বা লাইন। কাঙ্খিত টিকেটের আকাঙ্খায় অনেকসময় ব্ল্যাকে কাটতে হতো টিকেট। পছন্দের নায়ক-নায়িকার ছবি দেখার এই প্রেক্ষাপট নব্বই দশক পর্যন্ত দেখা গেলেও এখন তা স্মৃতিপ্রায়। নগর সভ্যতা আর স্যাটেলাইট-ইন্টারনেট জামানায় সিনেমা দেখার হল কমে যাওয়ার পাশাপাশি হলে গিয়ে সিনেমা দেখার চলও কমেছে। তবে এটাও ঠিক সুস্থধারার ছবি তৈরি হলে এবং সিনেমা হলের পরিবেশ অনুকূলে থাকলে দর্শক ঠিকই হলমুখী হয়। যার প্রমাণ আমরা সাম্প্রতিক সময়ের কিছু সিনেমা মুক্তি পাবার পরে দেখতে পেয়েছি। সেইসঙ্গে দেশের সিনেমা হল থেকে সিনেপ্লেক্সের যে বিবর্তন, তার সংখ্যা বাড়লে সিনে খাতের প্রচার ঘটবে, মানুষ আরো বেশি হলে গিয়ে সিনেমা দেখবে। সরকারি অনুদানে নির্মিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘খাঁচা’ একটি সুস্থধারার ছবি, যা মুক্তি পেতে যাচ্ছে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর)। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় আটকে পড়া এক ব্রাক্ষণ পরিবারের কাহিনী নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে। ওই পরিবারের স্বপ্ন– তারা আর এদেশে নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের কোন মুসলিম পরিবারের সাথে বাড়িটি বদল করে সেখানে পাড়ি জমাবে। এরকম একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে ছবিটি। এর মুক্তির কথা ঘোষণা করে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর জানিয়েছেন, ‘খাঁচা ছবিতে পরিশ্রমের সাথে যোগ হয়েছে মায়া ও মমতা। তাছাড়া ছবিটি খুবই সময়োপযোগী। সিরিয়া সমস্যা বা রোহিঙ্গা ইস্যু সবকিছুর সাথে ছবিটির এক অন্যরকম সামঞ্জস্যতা রয়েছে। ছবিটি যেন এসব বেদনাকেই ধারণ করে।’ কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ছোটগল্প ‘খাঁচা’ অবলম্বনে এই ছবি নির্মাণ করা হয়েছে। সুস্থধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ ও পরিবেশনের আন্দোলনে এই ছবিটি দর্শকের সিনে ক্ষুধা মেটাবে বলে আমাদের ধারণা। প্রযোজনা সংস্থা এবং কলা-কুশলীরা আমা করছেন, দর্শকরা হলে গিয়ে সিনোম দেখবেন। আমরাও আশা করি, এরকম একটি সিনেমা দর্শককে হলমুখি করবে, আরো ভালো সিনেমা তৈরী হবে। চলচ্চিত্রের এই সুস্থধারা বজায় থাকুক আর হলমুখী হোক দর্শক, এই আমাদের প্রত্যাশা।