দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের অধিকারের আইনি লড়াইয়ে হেরে এখন রাগে ফুঁসছে চীন।
মঙ্গলবার হেগের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বিতর্কিত সমুদ্র–অঞ্চলটিতে চীনের ‘ঐতিহাসিক’ অধিকারের যুক্তি খারিজ করে দেয়। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে চলা বিচারিক আদালতের ওই রায় প্রত্যাখান করে চীন বলেছে, তারা এই রায় মানতে বাধ্য নয়।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় দেশটি জানিয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা দক্ষিণ চীন সাগরে বিমান প্রতিরক্ষা জোন নির্মাণ করবে।
আর যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, চীন বিরোধী এই রায় ওই অঞ্চলে সংঘাত আরো বাড়াবে।
হেগের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালকে ‘পুতুল’ বলে কটাক্ষ করেছে চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো। এ জন্য দেশটির মিডিয়াগুলোও আমেরিকাকেই দায়ী করেছে।
আদালত তার রায়ে জানায়, এখানে ফিলিপিন্সের অধিকার রয়েছে।
এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিপিন্স। তারাই বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে তুলেছিল।
গতমাসে দক্ষিণ চীন সাগর প্রসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছিলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কখনও আপস করবে না চীন। এ ব্যাপারে আমরা যতদূর সম্ভব যাব।’ ফলে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ে একটি পুরনো বিবাদ যে মিটে গেল, তা ধরে নেওয়ার কারণ নেই। বরং এই নিয়ে তাপ–উত্তাপ আরও বাড়বে।
শুধু ফিলিপিন্সই নয়, এই বিবাদে জড়িয়ে আছে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও তাইওয়ানের মতো কিছু দেশ। রয়েছে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রও। দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলে চীনের আধিপত্য রুখতে তৎপর আমেরিকা। পাশে চায় ভারতকে। সেখানে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে ভারতেরও।
বহুদিন ধরেই চীন দাবি করে আসছে এই এলাকা তাদের। ২০১৩ সালে দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর তাদের অধিকার দাবি করে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে যায় ম্যানিলা। তাদের বক্তব্য, ১৭ বছর আলোচনা করেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।
চীন দাবি করে ১৯৪০ সালে নয়টি লাইন দিয়ে যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল তাতে এই এলাকা চীনের বলেই মেনে নেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চীনের মৎস্যজীবীরা এই জলসীমা ব্যবহার করে আসছে।
দেশটি এরই মধ্যে ওই সমুদ্রের মাঝে কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে মোতায়েন রেখেছে নৌবহর।