চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ত্রিশালে নাতির সঙ্গে পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছেন নানী!

শেখ মহিউদ্দিন আহাম্মদ, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: শেখার কোন বয়স নেই বা অদম্য ইচ্ছার কাছে সকল প্রতিকূলতাই ব্যর্থ হয়। এই দুটি কথার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন ময়মনসিংহের ত্রিশালের সুন্দরী বেগম। ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নিজের ১০ বছর বয়সী নাতি জিহাদ মিয়ার সঙ্গে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ৬৫ বছর বয়সী নানী সুন্দরী বেগম।

ছয় বছর আগে এক ব্যাংক ব্যবস্থাপকের অপমানের ঘটনায় নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেন সুন্দরী বেগম। তার চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে একজন সৌদিপ্রবাসী, দু’ জন ভ্যানচালক। এদের মধ্যে শুধু ছোট ছেলে সাইদুল ইসলাম উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। ৬ বছর আগে সুন্দরী বেগম বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কাশিগঞ্জ শাখায় হিসাব খুলতে যান। সেসময় শুধু সই করতে শিখেছিলেন তিনি।

কিন্তু, তিনটি সইয়ের মধ্যে একটি ভুল হওয়ায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ফাইলটি সুন্দরী বেগমের সামনে ছুঁড়ে মারেন। সেদিন কেঁদে কেঁদে বাড়ি ফিরে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, যে কোনো মূল্যে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসবেন।

পরের দিন নাতি জিহাদকে নিয়ে সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হন। কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন নিয়মিত স্কুলে ক্লাস করতেন। ৬ বছর কঠোর পরিশ্রমের পর এই বছর তিনি নাতির সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এলাকায় আলোচিত হয়েছেন।

সাউথকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, আমার স্কুলের ২৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে সুন্দরী বেগমও পরীক্ষায় ভাল করবেন। সব ধরনের প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে তিনি নিরক্ষরতার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন।