চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ত্রিভুবন না মৃত্যুপুরী!

যেখানে একের পর এক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়

বহুমানুষের প্রাণহানীর জন্য দায়ী নেপালের ত্রিভুবন এয়ারপোর্টের ভয়াবহসব দুর্ঘটনার তালিকাকে আরও লম্বা করলো ইউএস বাংলার ফ্লাইট ২১১। নেপালের রাজধানী কাঠমন্ডুর ত্রিভুবন বিমান বন্দর ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বমোট ৭০ টিরও বেশি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে।

বড় দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন ইউএস-বাংলা২১১। এখন পর্যন্ত এই বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৭’শ জন।

যাত্রার শুরুর পর থেকেই অঘটনের শুরু হয় ত্রিভুবনে। ১৯৭২ সালের ১০ মে বিমানবন্দরটির রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট। সেযাত্রা উড়োজাহাজটির ১০০ যাত্রী ও ১০ ক্রুর মধ্যে নিহত হন ১ জন।  তবে থাই এয়ারওয়েজের আরেকটি এয়ারবাসের এতোটা সৌভাগ্য হয়নি।  ১৯৯২ সালের জুলাইয়ে ত্রিভুবনে অবতরণের আগে একটি পাহাড়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ১১৩ জনের প্রাণ নিয়ে বিধ্বস্ত হয় থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইট ৩১১।  সেবছরই ত্রিভুবনের বড় আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে সেপ্টেম্বরে, বিধ্বস্ত হয় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারের বিমান, নিহত হয় ১৬৭ জন।

ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে আরও যতো বিভীষিকা
১৯৯৯ সালের জুলাই ও সেপ্টেম্বরে কাঠমন্ডুর ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট ঘিরে ২ টি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হন ২০ জন।  সেবছরই ডিসেম্বরে এই বিমানবন্দর থেকে সন্ত্রাসবাদীরা হাইজ্যাক করে ইন্ডিয়ান এয়ালাইন্সের ফ্লাইট ৮১৪।

ত্রিভুবন ঘিরে চলতেই থাকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা।  ২০০৮ সালে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে নেপালের একটি উড়োজাহাজ। তবে সেবার কোন হতাহত ছিলো না।

২০১১ সালে বুদ্ধ এয়ারের একটি উড়োজাহাজ বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় ১৯ জন আরোহীর মধ্যে একজন শুরুতে প্রাণে বাঁচতে সক্ষম হলেও পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মারা যান।

এর ঠিক পরের বছর ২০১২ সালে সিতা এয়ারের একটি বিমান উড়াল দেয়ার পরপরই সম্ভবত একটি শকুনের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৯ জন আরোহীর সবাই মারা যান।

২০১৫ সালে তুর্কী এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ঘন কুয়াশার মধ্যে নামতে গিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়ে।  ৩০ মিনিট ধরে এটি বিমানবন্দরের উপর উড়তে থাকে। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় নামতে পারলেও সেটি রানওয়ের থেকে ছিটকে মাঠের ঘাসের উপর চলে যায়। ২২৭ জন যাত্রীকে সেখান থেকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়।

২০১৭ সালের মে মাসে সামিট এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়, এতে পাইলট ও ফার্স্ট অফিসার নিহত হন।

কেন এমন ত্রিভুবন?
ইউএস-বাংলার ফ্লাইট ২১১ বিধ্বস্তের পর আবারও আলোচনায় নেপালের ঝুঁকিপূর্ণ ত্রিভুবন বিমানবন্দর। পাহাড়ে ঘেরা এই বিমানবন্দরটি কাঠমান্ডু উপত্যকায়। এটি কাঠমান্ডু শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে। উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত তদন্তকারীদের মতে, ভৌগলিক অবস্থান ছাড়াও নিচু দিয়ে ওড়া মেঘ, ঝুঁকিপূর্ণ রানওয়ে এসব উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পেছনে কাজ করে এখানে।