“১৪ দল ‘তেঁতুল গোষ্ঠী’র সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক লেনদেনে নাই” বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সরকারের আলোচনার পর জোটের অবস্থান তুলে ধরতে বুধবার শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৮৮তম জন্মদিনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
‘জঙ্গিগোষ্ঠী এবং তেঁতুল হুজুর চক্র যাতে বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত না করতে পারে’ সেজন্য দেশবাসীকে ‘শেষ লড়াইয়ে’ নামার আহ্বান জানান তিনি।
‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তা করা ‘মুজাহিদ বাহিনী’র অন্যতম হোতা ছিলেন আজকের আহমদ শফী।’
হেফাজতে ইসলামের আমিরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে হেফাজতের সঙ্গে সরকারের বৈঠক একেবারেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, ‘৫ মে মতিঝিলে হেফাজতের তাণ্ডবের পর আমরা নেতাদের সম্পর্কে অনুসন্ধান চালাই। আজকের হেফাজত আমির এই শফী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঠেকাতে পাকিস্তানিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গঠন করেছিলো মুজাহিদ বাহিনী। তবে আল-বদর, আল শামস নিয়ে কথা হলেও এতোদিন মুজাহিদ বাহিনীর নামটা রহস্যজনকভাবে আড়ালেই থেকে গিয়েছিলো।’
এমনকি দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান যে জঙ্গি গোষ্ঠীটির মাধ্যমে হয়েছিলো সেই হরকাতুল জিহাদের প্রতিষ্ঠাতাদের সবাই আজ হেফাজত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সরকার-হেফাজতের আপোষ-সমঝোতায় বিস্ময় প্রকাশ করেন ইতিহাসবিদ ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অন্যতম নেতা অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে রসিকতা করে তিনি বলেন, ‘যেই হেফাজত কোরআন পুড়িয়ে সরকার নামাতে চেয়েছিলো আজ সেই হেফাজত পোষা কবুতরের মতো শেখ হাসিনার হাত থেকে গম ঠুকরে খাচ্ছে!’
তবে সরকার-হেফাজত আপোষ-সমঝোতা নিয়ে সন্দেহভিত্তিক সমালোচনা হলেও অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই বলে একমত প্রকাশ করেন। তবে রাজনৈতিক কৌশল যাতে মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত দেশের অস্তিত্বকে বিপন্ন না করে এব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি তোলা শহীদ জননী জাহানারা ইমামের রাজপথের সরব ভূমিকা সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হয়। যুদ্ধাপরাধীদের প্রাপ্য শাস্তি এখন বাস্তবায়িত হওয়ায় ২৫ বছর আগে শুরু করা শহীদ জননীর আন্দোলন আজ বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করছে বলে কৃতজ্ঞ চিত্তে তাকে স্মরণ করেন অতিথি-আয়োজকরা।