ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বা ব্রেক্সিট প্রশ্নে তৃতীয় দফা ভোটেও পার্লামেন্টে হেরে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে।
বুধবারের ভোটে এই হারের পর এখন ব্রেক্সিটের তারিখ পেছানোর জন্য ইইউর কাছে আবেদন জানানো হবে কিনা, তা নিয়ে আজ ব্রিটিশ সংসদে ভোটাভুটি হবে।
ভোটে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেছেন ব্রিটিশ এমপিরা। বিবিসি জানিয়েছে, হাউজ অব কমনসে হওয়া দ্বিতীয় দফা ভোটে মে’র পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩০৮ জন। আর তার বিপক্ষে ছিলেন ৩১২ জন এমপি।
মাত্র ৪ ভোটের পার্থক্য থাকায় আবারও ভোট নেয়া হলে নির্ধারণী ভোটে মে’র পক্ষে পড়ে ২৭৮ ভোট। আর বিপক্ষে ৩২১টি। ৪৩ ভোটের ব্যবধানে হেরে যায় প্রধানমন্ত্রীর চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রস্তাব।
আগামী ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যের আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ব্রেক্সিটের চুক্তি নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় রয়েছে যুক্তরাজ্য। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত একের পর এক খসড়া চুক্তি এমপিরা ভোটের মাধ্যমে বাতিল করে দিচ্ছেন।
চুক্তি ছাড়া যে ব্রেক্সিট সম্পন্ন করা হবে, বুধবারের ভোটের পর সে উপায়ও আর রইল না। কেননা সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনো পরিস্থিতিতেই চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করা যাবে না। ওদিকে ইইউও জানিয়ে দিয়েছে এ ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আর কোনো আলোচনায় যেতে রাজি নয় তারা।
তবে ইইউর সঙ্গে ঠিক হওয়া খসড়া চুক্তিতে যদি ২০ মার্চের মধ্যে অর্থাৎ ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিতব্য ইইউ সম্মেলনের আগে এমপিরা সমর্থন দেন, তাহলে ইইউর অনুমোদন নিয়ে ব্রেক্সিটের সময় পিছিয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় নেয়ার সুযোগ রয়েছে। এজন্য আগামী সপ্তাহে হয়তো আরেকবার ভোট আয়োজনের চেষ্টা করতে যাচ্ছেন টেরেসা মে।
মে সতর্ক করে বলেছেন, ২০ মার্চের মধ্যে যদি খসড়া চুক্তিটি গৃহীত না হয় তবে ৩০ জুন না, আরও অনেক পেছাতে হবে ব্রেক্সিট। কেননা তখন বাধ্য হয়েই মে মাসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনে যুক্তরাজ্যকে অংশ নিতে হবে।
আরেক দফা হারে টেরেসা মে’র সামনে আর কোনো রাস্তাই খোলা নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বড়জোর এরকম পরিস্থিতিতে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের চেয়ে আবারও গণভোটের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও ধারণা করছেন তারা।