ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় রেল দুর্ঘটনায় তূর্ণা-নিশীথা ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার), সহকারী চালক (সহকারী লোকো মাস্টার) এবং একজন গার্ডসহ মোট তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মিয়া জাহান।
এর আগে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মন্দবাগ রেল স্টেশনে তূর্ণা-নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষের জন্য ঢাকাগামী তূর্ণা-নিশীথা ট্রেনকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তূর্ণা-নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় রেল মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনসহ ৫টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটিকে ২৪ ঘণ্টা এবং মন্ত্রণালয়ের কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া মন্ত্রী দুর্ঘটনায় নিহতদের এক লাখ টাকা এবং আহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশ দাফনের জন্য নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা দেয়ার কথা জানানো হয়েছিল।
সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগে দুইটি ট্রেনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন শতাধিক যাত্রী। তাদের মধ্যে ২৬ জনের অবস্থা গুরুতর।
হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিক হতাহতদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মর্মান্তিক এ রেল দুর্ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
পুলিশ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা-নিশীথা এবং সিলেট থেকে চট্টগ্রামে দিকে যাত্রা করা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রেন দুুুটির কয়েকটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম জানান, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজ চালছে।
এই দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের রেলযোগাযোগ ৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ১০টার পর আবার স্বাভাবিক হয়।