সড়ক দুর্ঘটনায় গত তিন মাসে ১ হাজার ২শ’ ১২ জন নিহত ও ২ হাজার ৪শ’ ২৯ জন আহত হয়েছেন। নিহতের তালিকায় ১৫৭ নারী ও ২১৫ শিশু রয়েছে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ সারা দেশে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে।
বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২২টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৩শ’ ৮৩টি দুর্ঘটনায় ৫৩ নারী ও ৭১ শিশুসহ ৪শ’ ১১ জনের প্রাণহানি এবং ৭শ’ ২৫ জন আহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ৪শ’ ১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪শ’ ১৫ জন ও আহত হয়েছেন ৮শ’ ৮৪ জন। নিহতের তালিকায় ৫৮ নারী ও ৬২ শিশু রয়েছে। মার্চে ৩শ’ ৮৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ নারী ও ৮২ শিশুসহ ৩শ’ ৮৬ জন নিহত ও ৮শ’ ২০ জন আহত হয়েছেন।
জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির জন্য ১০টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো-
১. চালকদের প্রতিযোগীতামূলক মনোভাব ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো
২. দিনভিত্তিক চুক্তিতে চালক, কন্ডাক্টর অথবা হেল্পারের কাছে গাড়ি ভাড়া দেয়া
৩. অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ
৪. সড়কে চলাচলে পথচারীদের অসতর্কতা
৫. বিধি লঙ্ঘন করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং
৬. দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো
৭. ত্রু টিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব
৮.জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা
৯. সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি
১০. স্থানীয়ভাবে তৈরি ইঞ্জিনচালিত ক্ষুদ্রযানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন।
এ বিষয়ে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু আইন দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে না। এর বিরুদ্ধে জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। এছাড়া সড়কের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে নৌ ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত ও আধুনিকায়ন করা আবশ্যক। নাহলে নিকট ভবিষ্যতে সড়ক দুর্ঘনা আরও ভয়ংকর রূপ নেবে।