মঙ্গলবার রাতে সম্ভবত লা লিগায় চলতি মৌসুমের সবচেয়ে উত্তেজক ম্যাচের সাক্ষী থাকল ফুটবল প্রেমীরা। লিগে অবনমনের আওতায় থাকা ভিয়ারিয়ালের বিরুদ্ধে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও বার্সা পিছিয়ে পড়ে ২-৪ গোলে। শেষ ৩ মিনিটে জোড়া গোল তুলে আবার পয়েন্ট ভাগ করে নেয় কাতালানরা। পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমে আরও এক স্মরণীয় কামব্যাকের গল্প লেখেন লিওনেল মেসি।
লিগ টেবিলে নিচের দিকে থাকা দলের বিরুদ্ধে এতটা বেগ পেতে হবে ভাবতে পারেননি বার্সা কোচ আর্নেস্টো ভালভের্দে। তাই কিনা জেরার্ড পিকে, ইভান রাকিটিচ কিংবা লিও মেসির মতো নামগুলোকে এদিন প্রথম একাদশে রাখেননি তিনি। যদিও ম্যাচে এগিয়ে যেতে খুব সময় নেয়নি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ম্যালকমের ঠিকানা লেখা পাস থেকে স্কোরলাইন ১-০ করেন ফিলিপে কৌতিনহো। এর ঠিক মিনিট চারেক পরে স্কোরশিটে নাম তোলেন ম্যালকম নিজেই। আর্তুরো ভিদালের ক্রস থেকে দর্শনীয় হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এই ব্রাজিলিয়ান।
সুয়ারেজের পাস থেকে কৌতিনহোর একটি শট পোস্টে লেগে ফিরে না এলে প্রথার্ধেই ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিতে পারত বার্সা। তবে ঘরের মাঠে এদিন মোটেই ছাড়ার পাত্র ছিল না অবনমনের আওতায় থাকা ভিয়ারিয়াল। দুর্দান্ত পাসিং ফুটবলে ২৩ মিনিটে গোলের খাতা খুলে ম্যাচে ফেরে তারা। স্যান্টি কাজোর্লার পাস থেকে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল চুকুয়েজের শট প্রাথমিকভাবে বার্সা গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরতি বল ধরে ঠান্ডা মাথায় জালে রাখেন নাইজেরিয়ান।
দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে গোলস্কোরার চুকুয়েজের পাস ধরে বক্সের মধ্যে বিপক্ষ ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে কোনাকুনি শটে দলকে সমতায় ফেরান টোকো একাম্বি। এরপর মধ্যমনি মেসিকে আর বেঞ্চে বসিয়ে রাখার সাহস দেখাননি ভালভের্দে। তবে ৬২ মিনিটে ঠিকানা লেখা থ্রু বল ধরে ম্যাচে তৃতীয়বারের জন্য পিকেহীন বার্সা ডিফেন্সকে মাটি ধরায় ইয়েলো সাবমেরিন। ভিয়ারিয়ালকে ম্যাচে প্রথমবারের জন্য এগিয়ে দেন ভিসেন্তে ইবোরা।
পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে আরও দু’টি পরিবর্তন আনেন বার্সা কোচ। কিন্তু এই ফাঁকে অসাধারণ ফুটবল খেলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় স্বাগতিকরা। স্যান্টি কাজোর্লার পাস ধরে পরিবর্ত খেলোয়াড় কার্লোস বাচ্চা বার্সা গোলরক্ষকে বোকা বানিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে।
এরপর সবাই যখন ধরে নিয়েছে ম্যাচে বার্সার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী ঠিক তখনই মেসি ম্যাজিক। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে মানবপ্রাচীরের নাগাল এড়িয়ে মেসির ফ্রি-কিক জড়িতে যায় জালে।
এরপর অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে মেসির কর্নার ভিয়ারিয়াল রক্ষণে প্রতিহত হয়ে গিয়ে জমা পড়ে সুয়ারেজের কাছে। বাঁ-পায়ের বুলেট ভলিতে পিছিয়ে পড়া বার্সেলোনাকে সমতায় ফেরান উরুগুয়েন স্ট্রাইকার। ৪-৪ গোলে অমীমাংসিত অবস্থায় শেষ হয় ম্যাচ।
এই ড্রয়ের ফলে ৩০ ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে পরিষ্কার ৮ পয়েন্টে এগিয়ে সুয়ারেজ-মেসিরা। লিগের অন্য ম্যাচে এদিন জিরোনাকে ২-০ গোলে হারায় অ্যাটলেটিকো।