অর্থ, ভূমি ও আইন – এই তিন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতায় আবাসন খাতে নিবন্ধন ব্যয় কমছে না বলে অভিযোগ করেছে আবাসন খাতের সংগঠন রিহ্যাব।
রোববার হোটেল সুন্দরবনে রিহ্যাব উইন্টার ফেয়ার-২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল এই অভিযোগ করেন।
নীতিনির্ধারণী কিছু সমস্যার আবাসন খাত সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখনো উচ্চ নিবন্ধন ব্যয়, সব নাগরিকের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ব্যবস্থা না থাকা এবং ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার এই খাতের বড় প্রতিবন্ধকতা।
রিহ্যাবের সভাপতি বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী নিবন্ধন ফি কমানোর ঘোষণা দিলেও এখনো ব্যয় কমানোর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। এক্ষেত্রে এনবিআরের সহযোগিতা থাকলেও অর্থ, ভূমি ও আইন – এই তিন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার অভাবে এটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
‘‘তাই জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে প্রায় ১৫ শতাংশ অবদান রাখা আবাসন খাতে নিবন্ধন ব্যয় কমিয়ে ৬-৭ শতাংশে নিয়ে আসলে এ খাত অর্থনীতিতে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে।’’
রিহ্যাবের সদস্য সংখ্যার বিষয়ে আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, এক সময় ১৩শ’ সদস্য ছিল রিহ্যাবের। মাঝখানে তা কমে ৮শ’ তে নেমে এলেও এখন আবার বেড়ে ১০০১টিতে দাঁড়িয়েছে।
এই ব্যবসায় সবচেয়ে বড় বাধা অতিরিক্ত সুদ হার এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ঋণের সুদ হার এক অংকে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা আশা করি তিনি শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন করবেন।
মেলা থেকে যে কেউ নির্দিধায় প্লট ও ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন উল্লেখ করে রিহ্যাবে সভাপতি বলেন, রাজউকের অনুমোদনহীন কোনো প্লট বা ফ্ল্যাট মেলায় প্রদর্শন করা হয় না। অতএব এখান থেকে নির্ভয়ে ক্রেতারা কিনতে বা বুকিং দিতে পারবেন।
বিদেশি কোম্পানি ঢাকায় ব্যাচেলরদের জন্য সুপার হোস্টেল চালু করেছে কিন্তু বাংলাদেশের আবাসন কোম্পানিগুলো এক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশে ঋণের সুদ অত্যন্ত কম। তাই তারা বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে সুদ হার দুই অংকের ঘরে। তাই বিদেশিদের সাথে এ ধরণের ব্যবসায় প্রতিযোগিতা করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আবাসন খাতের রিহ্যাব উইন্টার ফেয়ার-২০১৯ শুরু হতে যাচ্ছে আগামী মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর)। এবারের মেলায় মোট ২৩০টি স্টল থাকছে। এবছর ৩০টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৪টি অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছে রিহ্যাব।
রিহ্যাব সদস্য এবং ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে এই মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া রিহ্যাব ফেয়ার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মনের মতো ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজে নিতে ক্রেতাদের সাহায্য করবে বলে জানান রিহ্যাব সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, মোহাম্মদ আনোয়ারুজ্জামান, কামাল মাহমুদ।এবং ফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেম-এ মেলার উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম দিন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা দুপুর ২টা থেকে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। বাকি দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবে। মেলায় দুই ধরনের টিকিট থাকছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি অপরটি মাল্টিপল এন্ট্রি। সিঙ্গেল টিকেটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেটের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় পাঁচবার প্রবেশ করতে পারবেন। এন্ট্রি টিকিটের সম্পূর্ণ অর্থ দুঃস্থদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে।
মেলায় এন্ট্রি টিকিটের র্যাফেল ড্রতে থাকছে মূল্যবান সব পুরস্কার। এবছর মেলার শেষ দিন ২৮ ডিসেম্বর রাত ৯টায় র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। র্যাফেল ড্র এর ১ম পুরস্কার- ১টি প্রাইভেট কার, ২য় পুরস্কার- ১টি মোটরসাইকেল, ৩য় পুরস্কার- ১টি ফ্রিজ, ৪র্থ পুরস্কার- ১টি ৪৩ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন, ৫ম পুরস্কার- ১টি ওয়াশিং মেশিন, ৬ষ্ঠ পুরস্কার- ১টি ডিপ ফ্রিজ, ৭ম পুরস্কার- ১টি মোবাইল ফোন, ৮ম পুরস্কার- ১টি মোবাইল ফোন, ৯ম পুরস্কার- ১টি মাইক্রোওভেন এবং ১০ম পুরস্কার- ১টি এয়ার কুলার। এছাড়া আরও পাঁচটি পুরস্কার থাকবে।
www.rehabwinterfair2019.com এই ওয়েবসাইটে লটারি বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করা হবে।