ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে শেষ চার থেকে একটি জয় দূরে নিউজিল্যান্ড। শনিবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে তাসমান সাগর পাড়ের দুই প্রতিবেশী।
অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য নকআউটের আগে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখা। আর ঐতিহাসিক লর্ডসে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ড।
আসরে খেলা ৭ ম্যাচের ৬টিতে জিতে ১২ পয়েন্টে প্রথম দল হিসেবে সেমি নিশ্চিত করেছে অজিরা। সেখানে ৭ ম্যাচে ৫ জয়, একটি পরাজয় ও একটি পরিত্যক্ত ম্যাচের সুবাদে ১১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে আছে নিউজিল্যান্ড। নিজেদের শেষ ম্যাচে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে কিউইরা। তার আগে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই সেমি নিশ্চিত করতে চায় কেন উইলিয়ামসনের দল।
বিশ্বকাপের কয়েকমাস আগেও যদি কেউ বলতো অস্ট্রেলিয়া প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেবে, খুব বেশি লোককে তার পক্ষে পাওয়া যেত না! তবে আসরের আগে আগে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়, আর ওয়ার্নার-স্মিথ ফেরা, বদলে দিয়েছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের। বিশ্বকাপের মঞ্চেও সেটার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা এবারও শিরোপার অন্যতম দাবিদার।
নিউজিল্যান্ড গত আসরের ফাইনাল খেলেছে, সাতবার সেমিতে খেলার পর প্রথম ফাইনাল, সেখানে এই অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেই শিরোপার স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছে কিউইরা। চার বছর আগের হারের ক্ষতে প্রলেপ হয়ত হবে না, তবে কিছুটা ফিরিয়ে দেয়ার দারুণ সুযোগ পাচ্ছেন উইলিয়ামসনরা।
দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে যোজন যোজন এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। তাসমান সাগর পাড়ের দুই প্রতিবেশী এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১৩৬ বার মুখোমুখি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ৯০ জয়ের বিপরীতে কিউইদের জয় মাত্র ৩৯টিতে। অন্য ৭টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
অন্যদিকে বিশ্বকাপে পারফরম্যান্সও অস্ট্রেলিয়ার আধিপত্যের কথা বলছে। বিশ্বমঞ্চে এখন পর্যন্ত ১০ বারের সাক্ষাতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৭টিতে, নিউজিল্যান্ড জিতেছে ৩ বার।
গত বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েই পঞ্চমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। একই আসরের গ্রুপ পর্বে লো-স্কোরিং ম্যাচে রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে অজিদের ১ উইকেটে হারিয়েছিল কিউইরা।
চলতি আসরেও শুরুতে দারুণ ছন্দে ছিল নিউজিল্যান্ড। ভারত ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও অন্য পাঁচটিতে টানা জিতে সেমিফাইনালের পথেই ছিল কিউইরা। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হেরে ছন্দপতন ঘটে উইলিয়ামসনদের। তবে নিজেদের শেষ ম্যাচে হেরে গেলেও সেমিফাইনালের দৌড়ে ভালোভাবেই থাকছে কিউইরা।
সেক্ষেত্রে রানরেট ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে এতসব সমীকরণে না গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই সেমিতে যেতে মরিয়া নিউজিল্যান্ড।
অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার মিডলঅর্ডারকে এখনো কোনো বড় পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। অন্যদিকে মিচেল স্টার্করা চেনা ছন্দে থাকায় বোলিং অ্যাটাক নিয়ে নির্ভারই রয়েছে অজিরা।
পাকিস্তান ম্যাচের আগে কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরের ব্যাটে ভর করে জিতে আসছিল নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের বিপক্ষে এই দুজনের ব্যর্থতায় কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও জিমি নিশাম নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং গভীরতার প্রমাণ দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাই দারুণ কিছুর স্বপ্নই দেখছে কিউইরা।
টিম নিউজ
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেরা একাদশ খুঁজে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ফলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই তাদের। নকআউটের আগে চাইলে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা বেঞ্চের শক্তিও পরখ করে দেখতে পারে।
নিউজিল্যান্ড গোটা আসরজুড়ে একই একাদশ মাঠে নামিয়েছে। ইশ সোধি, হেনরি নিকোলস ও টিম সাউদিরা বেঞ্চেই সময় পার করছেন। শেষ চার ম্যাচে মাত্র এক উইকেট পাওয়া ম্যাট হেনরির জায়গায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একাদশে ঢুকতে পারেন টিম সাউদি।
সম্ভাব্য একাদশ
অস্ট্রেলিয়া: অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, উসমান খাজা/শন মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, অ্যালেক্স ক্যারি, প্যাট কামিন্স, নাথান কোল্টার-নাইল, মিচেল স্টার্ক ও অ্যাডাম জাম্পা।
নিউজিল্যান্ড: মার্টিন গাপটিল, কলিন মুনরো, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, টম ল্যাথাম, জেমস নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টেনার/ইশ সোধি, লোকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি।