আসন্ন জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন নিয়ে চলচ্চিত্র পরিবারের অভিযোগ নাকচ করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, তারা ডাহা মিথ্যা বলছেন। তারা যা বলছেন তা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসের অনুষ্ঠানে কে সভাপতিত্ব করবেন এ নিয়ে যে বিতর্ক চলছিল সেটাও গত পরশুদিন তিনি সুরাহা করেছেন জানিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি যখন জানলাম যে কেউ কেউ তার সভাপতিত্ব করার বিরোধিতা করেছেন তখন আমি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি যে ৩রা এপ্রিলের অনুষ্ঠানে হাসান ইমামই সভাপতিত্ব করবেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস একটি সরকারি কর্মসূচি। বর্তমান শেখ হাসিনার সরকারই এ দিবসটির ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধু এফডিসি প্রতিষ্ঠার সময় যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় এই দিবস।
‘এটি সরকারি কর্মসূচি। তারপরও আমি উদযাপন কমিটিতে হাসান ইমামকে সভাপতি করার কথা বলেছি। যেহেতু সরকারি কর্মসূচি তাই এফডিসির এমডিকে সদস্য সচিব করতে বলি। সরকারি কর্মসূচি বলে কেউ কেউ এফডিসির এমডিকে কমিটির এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু, আমি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে বলে দিয়েছি, প্রবীণ অভিনেতা কমিটি এবং অনুষ্ঠান দুটিরই সভাপতি হবেন,’ বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রণালয় বা সরকার কেউ এ দিবসে কিছু করেন না বরং মজা নেন বলে যে অভিযোগ তা অনেকটা হেসে উড়িয়ে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন: তাহলে দিবসটা পালন করে কে? মন্ত্রণালয় হিসেবে তথ্য মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টা দেখভাল করে, এফডিসি সেটা বাস্তবায়ন করে। খরচও পুরোটা সরকারই দেয়।
‘যেহেতু বিষয়টা শিল্পীদের তাই তাদের অংশগ্রহণ যতো বেশি থাকে সেই চেষ্টা আমরা করি। সে হিসেবেই হাসান ইমাম উদযাপন কমিটির সভাপতি হয়েছেন।’
চলচ্চিত্র পরিবারের আরও কিছু অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, দেশে বছরে ৫০ থেকে ৭০টা চলচ্চিত্র হয়। সাফটা চুক্তির কারণে আমরা একটি সিনেমা রপ্তানির বিপরীতে একটি সিনেমা আমদানি করতে পারি। তাই ভারতীয় বা বিদেশী সিনেমা দেশের চলচ্চিত্রকে গ্রাস করছে এমন কথা ধোপে টেকে না।
তিনি জানান, ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ভারতীয় চলচ্চিত্র এসেছে ৬টি। সেটাও এমন কমিটির মাধ্যমে এসেছে যেখানে আজকের অভিযোগকারী চলচ্চিত্র পরিবারের লোকজন আছেন। যারা আমদানি করছেন তারাই আবার অভিযোগ করেন কীভাবে? বলে বিস্ময় প্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশে চলচ্চিত্র মুক্তি দেওয়ার বিষয়টাও তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করেন না। প্রযোজক এবং পরিবেশন সমিতি ঠিক করে যে কোন শুক্রবার কোন সিনেমা মুক্তি পাবে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই।
মন্ত্রী জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর অনুদানের সিনেমার সংখ্যা বেড়েছে, অনুদানের পরিমাণ ৩০ লাখ থেকে ৬০ লাখ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু, কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে বর্তমান সরকার চলচ্চিত্রের জন্য কিছু করছে না।
‘অথচ এ সরকারই চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে।’
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথোপকথনে এফডিসি এবং বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটির উন্নয়নে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন তিনি। ‘কয়েক বছর আগেও এফডিসির ফ্লোরগুলোতে বাতি জ্বলতো না। এখন সেখানে নিয়মিত শুটিং হচ্ছে, আর তারা বলছেন যে আমরা কিছু করছি না।’
চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সরকার এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন: এখন পর্যন্ত শুধু একটি বিষয়ে আমরা পিছিয়ে আছি। সেটা সিনেমা হলের বিষয়ে। কিন্তু হলগুলো যেহেতু ব্যক্তি মালিকানার তাই সরকারের পক্ষে দ্রুত সময়ে বড়কিছু করা করা কঠিন।
‘তারপরও আমরা চেষ্টা করছি। একটা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে সবগুলো হল ডিজিটাল করা হবে।।’
ছবি: তানভীর আশিক