চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

তারকাজীবন ভীষণ ভয় পাই: সালমান মুক্তাদির

সালমান মুক্তাদির। স্বল্পদৈর্ঘ্যর বিনোদনমূলক ও সামাজিক সচেনতনতামুলক ভিডিও নির্মাণ করেন। ব্যতিক্রমী উপস্থাপনার এই ভিডিওগুলো এতই দর্শকপ্রিয় হয়েছে যে, ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইউটিউব ব্যবহারকারী হিসেবে পরিচিত তিনি। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে অষ্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ইউটিউব সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে তিনি আমন্ত্রিত হন। পেয়েছেন স্মারক মেডেল। তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্রেজ হিসেবে পরিচিত সালমান ইউটিউবে প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপনও নির্মাণ করেন। অনুরোধে মাঝে মাঝে নাটকে অভিনয় করেন। একুশে টিভিতে তার নামে একটি অনুষ্ঠান হয়, ‘সালমান মুক্তাদির লাইভ’। তার সঙ্গে গতকাল বুধবার রাতে চ্যানেল আই অনলাইনের কথা হয়েছে নানা বিষয়ে।

আপনাকে শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।

আমি এই অপরাধকে ঘৃণা করি। যারা বনানীতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তাই শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে একাত্ম হতে গিয়েছিলাম।

এই সমস্যা কীভাবে রোধ করা যায়?

এটা একটা ব্যাধি। এমনিতেই রোধ করা সম্ভব নয়। ধর্ষণ বিষয়টা কী, কেন এটা অন্যায়— এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা দিতে হবে ছেলেমেয়েদের। নয়তো এই অপরাধ সমুলে নির্মূল করা যাবে না। দু’দিন পর পর অপরাধ ঘটবে আর আমরা প্রতিবাদ করব। হয়তো এর মধ্যেই দু–একটির বিচারও হবে।

ইউটিউবে ‘সালমান দ্য ব্রাউন ফিশ’ ও ‘সালমান দ্য পুটিমাছ’ কেমন চলছে?

আগের চেয়ে ভালো। এখন এই দুটি চ্যানেলে বিনোদন ও সামাজিক সচেতনতামুলত ৭৬টি ভিডিও রয়েছে।

কেমন আয় হচ্ছে?

এই ভিডিওগুলো থেকে মাসে আয় হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা।

সালমান মুক্তাদির

চ্যানেল দুটির বয়স তো কয়েক বছর হয়ে গেল। সেই হিসাবে ভিডিওর সংখ্যা কম মনে হয়?

ইচ্ছে করেই কম রেখেছি। আমি শালীনতা বজায় রেখে দর্শককে সন্তুষ্ট করতে চাই। তাই গল্প ও নির্মাণে মনোযোগ বেশি দিয়ে এগুলো নির্মাণ করেছি। আর সময় নিয়ে করেছি। এজন্য ভিডিওর সংখ্যা কম।

বাংলাদেশের মানুষ ইউটিউব ব্যবহারে কতটুকু এগিয়েছে?

অনেক এগিয়েছে। আমি যখন শুরু করি, তখন তো ইউটিউব ব্যবহারকারী অনেক কম ছিল। এখন গ্রামেগঞ্জেও ইন্টারনেট আছে। আর গ্রামে ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেটের সুবিধা পেয়ে সবাই ইউটিউব ব্যবহার করছে। এতে এটাই প্রমাণ হয়, আমরা এখন আর পেছনে পড়ে নেই। তবে যতটা পেছনে পড়ে আছি, সেটা কাভার হয়ে যাবে।

কীভাবে?

দেখুন, ইউটিউব চালানো মানে কিন্তু শুধু এতে গান-সিনেমা দেখা হয়। যারা নিয়মিত ইউটিউব ব্যবহার করেন, তারা ভিডিও নির্মাণ করে এডিট করার পর ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়েন। এখানে একাই সে ওয়ান ম্যান আর্মি। তবে এ অবস্থা খুব দ্রুত কেটে যাবে।

আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভিন্নধর্মী ভিডিও দেখা যায়। এমন ভাবনা কোথা থেকে পেয়েছেন?

এক্ষেত্রে তিনটি সূত্র থেকে নেই। এক নিজ থেকে, দুই ক্লায়েন্টের নির্দেশনা আর তিন আশেপাশের পরিবেশ থেকে। সবচেয়ে বড় কথা, ভাবনার জন্য অত কষ্ট করতে হয় না আমার। আমি কেবল গভীর রাত ছাড়া ব্রেনটাকে ঘুমাতে দেই না।

বাংলাদেশ থেকে তো ইউটিউব চ্যানেলের অনুমোদন হয় না।

এ অনুমোদন নেই। তবে বাংলাদেশে যে হারে ইউটিউব ব্যবহারকারী বাড়ছে, তাতে একদিন হয়তো তারা সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করার।

সালমান মুক্তাদির

আপনি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করছেন।

হ্যা। এর মধ্যে ১২টি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে ইউটিউবে প্রচার করেছি।

নতুন কোনো বিজ্ঞাপনচিত্র?

কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রই নির্মাণ করছি। শিগগিরই নির্মাণ করতে যাচ্ছি ইফাদ পানি বোতলের। এছাড়া চিপস, আরেকটি কোম্পানির পানির বোতলসহ আরও কয়েকটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করব।

ঈদের নাটকে কাজ করছেন?

না। প্রস্তাব এসেছিল অনেক। কিন্তু সবগুলোই ফিরিয়ে দিয়েছি। আসলে গল্প পছন্দ হয়নি। তাই এই ঈদে আমাকে ছোট পর্দায় দেখা যাবে না।

শুনেছিলাম, সিনেমায় অভিনয় করবেন।

একটি সিনেমায় অভিনয় করার কথা ছিল। সেটা অনেক আগে। কিন্তু এই সিনেমার এখনো শুটিং শুরু হয়নি। আদৌ হবে কিনা, সন্দেহ আছে।

আমি একজন তারকা— এমন অনুভূতি হয়?

কখনোই না। আমি স্বাভাবিক ভাবে চলতে পছন্দ করি। আবার তারকাজীবন ভীষণ ভয় পাই।

কেন?

আমি বড় তারকা। সবাই আমার খুব প্রশংসা করছে। আরেকদিন আমার অবস্থান নেমে গেল। এই ভাবনাটা যখন মাথায় আসে, তখন তারকাজীবন ভীষণ ভয় পাই।

বিয়ে করছেন কবে?

মা তো চান কালকেই বিয়ে দিয়ে দিতে। আমিও চাই। মা যেভাবে ভাবছেন, অত তাড়াতাড়ি না। তবে শিগগিরই বিয়ে করে ফেলব।

সালমান মুক্তাদির

ছবি : সংগৃহীত