তথ্যপ্রযুক্তির যুগান্তকারী ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাতা (এসডিজি) অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গতকাল জাতিসংঘের সদর দপ্তরে জাতিসংঘে এস্তোনিয়ার স্থায়ী মিশন ‘ই-গভার্নেন্স: পার্টনারশিপ ফর এচিভিং এসডিজিস’ শীর্ষক এক সাইড ইভেন্টে কী-নোট বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ বিশ্বকে পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে যে ১৭ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় সম্মতি জ্ঞাপন করেছে, বাংলাদেশও তা ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত করেছে। এছাড়াও ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রাসমূহও এসডিজি’র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে ই-গভর্নমেন্ট কার্যক্রমের আওতায় এর মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ, উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা, একুশ শতক উপযোগী মানব সম্পদ বিকাশে সহযোগিতা, আর্থিক- ধর্মীয়-জাতিসত্ত্বার পটভূমি বিচার না করেই নারী-পুরুষ সকলের জন্য সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
তিনি জানান, সকল মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ নির্বিঘ্ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি উচ্চ পর্যায়ের এসডিজি সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং এসডিজি বাস্তবায়ন অগ্রগতি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে একটি অনলাইন ডাটাবেজ ‘এসডিজি ট্র্যাকার’ চালু করা হয়েছে।
এসডিজি বাস্তবায়নে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক কর্মকান্ডের বর্ণনা দিয়ে পলক আরও বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল হেলথ রেকর্ড সিস্টেম প্রতিষ্ঠা এবং মোবাইল অ্যাপ-ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করেছি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সারাদেশে ৬০০০ ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা করেছি, আরও ১৫০০০ ল্যাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ইন্টারএকটিভ ডিজিটাল কন্টেন্ট চালু করার পাশাপাশি ২৫০০০ বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসরূম প্রতিষ্ঠা করেছি।প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ই-লার্নিং সাইট।’ সকল প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে নারীদের জন্য ন্যূনতম ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকারী কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমরা ই-জিপি চালু করেছি। সরকারি সেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পেরসুবিধা গ্রহণ অধিকতর কার্যকর ও সহজলভ্য করতে আমরা স্মার্ট আইডি চালু করেছি। চালুকৃত ই-টেক্সশনে ৩০ লক্ষ মানুষ ট্যাক্স প্রদানের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং তারা অনলাইনের ট্যাক্স রিটার্ণ দাখিল করছে।’
জাতিসংঘের সহকারী মহাপরিচালক মাগদা মার্টিনেজ-সলিমানের সঞ্চালনায় এই ইভেন্টে আরও বক্তব্য রাখেন এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি কেসটি কালজুলাইড, নামিবিয়ার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রী টম আলেওয়েন্ডো, কলম্বিয়ার জাতীয় পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রী লুইস ফার্নান্দেজ মেজিয়া। বক্তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মকান্ডে সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার অন্তর্ভূক্তিমূলক কার্যক্রমেরও প্রশংসা করেন।