করোনাভাইরাস আবারও বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়িয়ে তুলছে। করোনার দৈনিক সংক্রমণ ৩৪ লাখের কাছাকাছিতে উন্নীত হয়েছে। মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বে একদিনে এত রোগী শনাক্ত হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রেই একদিনে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে আট লাখেরও বেশি। যুক্তরাজ্যে প্রায় এক লাখ।
করোনায় প্রতিবেশি দেশ ভারতের অবস্থাও নাজুক। সেখানে একদিনে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে আড়াই লাখেরও বেশি। শুক্রবার এক দিনে ভারতে চলতি বছরের সর্বোচ্চ দুই লাখ ৬৪ হাজরের বেশি মানুষ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের হাসপাতালে যাওয়ার হার বাড়ছে। ডব্লিওএইচও আশঙ্কা করছে, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ইউরোপের অর্ধেক করোনায় সংক্রমিত হবে।
বাংলাদেশও এমন পরিস্থিতির বাইরে নয়। এখানে শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১৩৬ জন। এই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও তিন হাজার ৪৪৭ জন। শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ১৬ লাখ ১২ হাজার ৪৮৯ জন।
করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী গতি প্রতিরোধে ইতোমধ্যে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। তবে সেই বিধিনিষেধ তেমন একটা মানতে দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন এবং ধর্মীয় জনসমাগমসহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিধিনিষেধ মেনে চলার ধারে কাছেও যেন কেউ নেই। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে বলে আমাদের শঙ্কা। তখন লকডাউনে যাওয়া ব্যতীত আর কোনো পথ খোলা থাকবে না বলেই আমরা মনে করি।
লকডাউনের ক্ষতিকর দিকের বর্ণনা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজে। শনিবার তিনি বলেছেন, ‘করোনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে, সরকার ঘোষিত ১১ দফা বিধি নিষেধ না মানলে দেশের পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। লকডাউন দিলে দেশের ক্ষতি, আমরা সেদিকে যেতে চাই না।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সাথে আমরা একমত পোষণ করছি। লকডাউনের মতো ক্ষতিকর পরিস্থিতিতে যেতে না চাইলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। এজন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।