চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ঢাকায় মুসলিম পরিচয়ে জাপানি নারীকে দাফন

আইএস সংশ্লিষ্টতার কারণে যখন দেশের সীমানা পেরিয়ে জাপান ছাড়াও পশ্চিমা বিশ্বে উত্তরের জেলা রংপুরে জাপানি হোশি কুনিওর নিহত হওয়ার ঘটনাটি আলোচিত বিষয় ছিলো; তখন খোদ ঢাকাতেই খুন হন আরেক জাপানি। তবে তাকে মুসলিম পরিচয়ে দাফন করে ফেলার কারণে সেই খবর জানা গেছে প্রায় এক মাস পর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, ব্যক্তিগত বা সম্পত্তিজনিত বিরোধে খুন হয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ জাপানি নাগরিক হিরোয়ি মিয়েতা।

মুসলিম পরিচয়ে ওই জাপানি নারীর লাশ দাফন করা হয় উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের খালপাড় কবরস্থানে। দাফনের এক মাস পর লাশ তুলে তাই আবারো ময়না তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। তবে এরইমধ্যে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে থানায়। উত্তরা (পুর্ব) থানার ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে চারদিনের রিমান্ডে এনে জাপানি নাগরিক হিরোয়ি মিয়েতাকে মুসলিম পরিচয়ে দাফন এবং মৃত্যুর খবর গোপন করার উদ্দেশ্য জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ কর্মকর্তা এবং গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, জাপানি ওই নারী প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশে বসবাস করে আসছিলেন। একটি বায়িং হাউসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনি।

ঢাকায় জাপান দূতাবাস কিছুদিন ধরে তার নিখোঁজ থাকার সংবাদ জানানোর পর তদন্ত শুরু হয়। তখনই জানা যায়, হিরোয়ি মিয়েতাকে প্রায় এক মাস আগে মুসলিম পরিচয়ে দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ঢাকায় থাকলেও মিয়েতা প্রতিদিনই জাপানে ফোন করে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন। বিশেষ করে হোশি কুনিও নিহত হওয়ার পর তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতেন জাপানে তার পরিবার।

এরকম অবস্থার মধ্যেই গত ২৬ অক্টোবর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পেয়ে মিয়েতার মা শেষ পর্যন্ত বিষয়টি ঢাকায় জাপান দূতাবাসকে জানায়।

দূতাবাস প্রথমে মৌখিকভাবে এবং পরে ১৯ নভেম্বর থানায় জিডি করে পুলিশের কাছে হিরোয়ি মিয়েতার নিখোঁজ থাকার বিষয়ে অভিযোগ করে।

তদন্তে বেরিয়ে আসে, বেশ আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর মুসলিম পরিচয়ে তাকে কবরস্থও করা হয়েছে। কিন্তু পরিবারের কাছে তার মৃত্যুর খবর গোপন রেখে মুসলিম পরিচয়ে দাফন করার কারণে পুলিশ ধারণা করছে, খুন হয়েছেন হিরোয়ি মিয়েতা।

তিনি যে বায়িং হাউসের হয়ে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতেন প্রথমে ওই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে সন্দেহ করে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করে। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশের বিস্তারিত জানানোর কথা থাকলেও পরে জাপান দূতাবাসের অনুরোধে সংবাদ সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়।