ডেঙ্গু জ্বর আর বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করলেও হঠাৎ যেন এ বিষয়ে আলোচনা ও কর্মযজ্ঞ থেমে গেছে। ডেঙ্গুর বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শাহাদৎ হোসেন হাজরার মৃত্যুর পর।
চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা যায়: রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডা. শাহাদৎ হোসেন হাজরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুতে ডেঙ্গুর বিষয়টি অস্বীকার করলেও হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানানো হয়েছে: বেশ কিছুদিন ধরেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন শাহাদৎ হোসেন। এমনকি রোববার সকালে কার্যালয়ে গিয়ে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি সমন্বয় সভায়ও অংশ নেন। এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে শাহাদৎ হোসেন সেখান থেকে চলে আসেন।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়: এরপর তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল ৪টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ডা. শাহাদৎকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের হিসাবে, জুলাই মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন মোট ৪ হাজার ৪শ’ ৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর সরকারী হিসাবে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৬ হাজার ৫শ ৭০জন।
অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় বলতে গেলে অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য সংকটসহ নানা ধরনের রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে দূর্গত মানুষ। গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত তাদের করুণ অবস্থার চিত্র উঠে আসছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী তেমন কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তাদের সহায়তায় কাজ যে একেবারেই হচ্ছে না, তবে এই পদক্ষেপ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বর ও এডিস মশা প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় প্রশাসনের যেমন দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে, ঠিক তেমনই বন্যাকবলিত অঞ্চলে মানুষের পাশে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। অসহায় মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।