ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির বদৌলতে হাওরসহ দেশের সর্বত্র প্রচলিত চাষাবাদ বদলে যাবে।
নতুন প্রযুক্তি উপযোগী শিক্ষা না হলে সামনের দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টিকে থাকা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি যুগের বড় সংকটের নাম সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত লোকের চাকুরীর সংকট। এই সংকট দূর করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
সম্প্রতি তিনি হুয়াওয়ের উদ্যোগ ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ- হিয়ার ফর ইউ’র অংশ হিসেবে নেত্রকোনা জেলার দুঃস্থ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত থেকে এ কথা বলেন।
অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হুয়াওয়ে প্রায় দুই হাজার পরিবারের মাঝে জরুরি খাদ্যদ্রব্য, যেমন: চাল, মসুর ডাল, আলু, ওরাল স্যালাইন, চিনি, ময়দা ও অন্যান্য জিনিস বিতরণ করেছে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের বিকাশে অবদান রাখার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে বিনির্মাণের পথে রয়েছি এবং ডিজিটাল কানেক্টিভিটিই ডিজিটাল বাংলাদেশের মেরুদণ্ড। হুয়াওয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ডিজিটাল হাইওয়ে গড়ে তুলতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সেবাদানের কারণে আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাই। তারা ২২ বছর ধরে এদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রেও সহায়তা প্রদান করছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘ঢাকায় থেকে হাওরের ভার্চূয়্যাল প্রোগ্রাম করা-অভাবনীয় একটি বিষয়। তিনি বলেন, ভৈরব বাজার থেকে উত্তরে গারো পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃর্ণ হাওর এলাকার জীবন যাপন আর দেশের অন্য এলাকার জীবন যাপন এক নয়। এই সমগ্র-এলাকা ‘বর্ষায় সাগর এবং হেমন্তে প্রান্তর হয়ে যায়’। এ এলাকার যোগাযোগ ‘বর্ষায় নাও আর হেমন্তে পাও’- এ কথা উল্লেখ করে হাওর অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধকালিন মুজিব বাহিনীর কমান্ডার মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে গত ১২ বছরে এখানকার জীবন ধারা পাল্টে গেছে। তিনি বলেন, হাওর এলাকা থেকে এখন আইসিটি কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে। ধর্মপাশার ৫ মাইল দূরের একটি গ্রাম থেকে পৃথিবীর ২১টি দেশের আউটসোর্সিং কাজ করা হচ্ছে। সেখানে ৪৮ জন প্রোগ্রামার এখন কাজ করছে। এটাই হলো ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্জন।’’
হুয়াওয়ে বাংলাদেশে প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন বলেন, “এ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি বন্যাদুর্গত অঞ্চলে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আমাদের ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ-হিয়ার ফর ইউ’ শীর্ষক একটি সামগ্রিক উদ্যোগেরই প্রচেষ্টা। এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করতে কাজ করে যাবো। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যেখানে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করি সেসব কমিউনিটিতে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পেরে গর্বিত। ভবিষ্যতে আমরা এক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে অবদান রাখতে চাই।”
অনুষ্ঠানে বক্তারা, ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশ, যোগাযোগ এবং কৃষিসহ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন এবং এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজী আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে খালিয়াজুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, হুয়াওয়ে টেকনোলজি (বাংলাদেশ) লিমিটেড’র সিইও ঝাং ঝেংজিয়ান, স্থানীয়-উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সুমন চক্রবর্তী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম আরিফুল ইসলাম,নেত্রকোণা জেলা পরিষদের সদস্য গোলাম আবু ইসহাক এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দিন সরকার বক্তৃতা করেন।