মরণব্যাধি ক্যান্সার কেড়ে নিয়েছে সাত বছরের ফুটফুটে শিশু শাফির প্রাণ। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শনিবার বাবা-মায়ের বুক খালি করে পরপারে চলে গেছে শাফি।
বাংলাদেশ ও ভারতে চিকিৎসা হয়েছে শাফির। কিন্তু ভারতে গিয়ে শাফির ক্যান্সারের বিষয়টি জানান চিকিৎসকরা। অথচ বাংলাদেশের ডাক্তাররা বুঝতেই পারেননি শাফির ক্যান্সার হয়েছিল।
তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে গালের নিচে ও গলার উপরের অংশে ফুলে যায় শিশুটির। ভালো ডাক্তার দেখান তার সচেতন বাবা।
ডাক্তার জানান, এটা মামস। অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের পর সেটা সেরেও যায়।
গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে শাফির একই জায়গা আবার ফুলে যায়। ঢাকার একটি অভিজাত হাসপাতালে আরো বড় একজন ডাক্তার দেখানো হয়।
তিনিও জানান, এটা মামস। মামসের ঔষধ চলতে থাকে।
এরমধ্যে শাফির মাথায় একটি টিউমার জন্ম নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে তা বেশ বড় হয়ে যায়। একটা চোখও ফুলে ওঠে। অভিজাত হাসপাতালের ডাক্তার একজন নিউরোলজিস্টকে দেখাতে বলেন।
নিউরোলজিস্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, নিউরোলজির কোন সমস্যা নেই। মাথার টিউমারটি চামড়া থেকে উঠেছে, ব্রেইনে এর কোন প্রভাব নেই।
পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় গত ১১ আগস্ট শাফিকে ভারতের ব্যাঙ্গালোরে নিউরোলজির স্পেশালাইড একটি হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখানে ডাক্তার দেখে শাফির বাবাকে জানান, তারা ভুল জায়গায় এসেছে। শাফিকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী ক্যান্সার হাসপাতালে নিতে বলা হয়।
ক্যান্সার হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানানো হয়, শাফির ‘অ্যাক্যুইট লিউকেমিয়া’ একেবারে শেষ পর্যায়ে। এই অবস্থায় কোন রোগীর আর উন্নত চিকিৎসার চেষ্টা করা হয় না। পৃথিবীর কোন হাসপাতালেরই এখন আর কিছু করার নেই।
ব্যাঙ্গালোর ক্যান্সার হাসপাতালের ডাক্তাররা খুব অবাক হয়ে জানতে চেয়েছিলেন, শাফির এই অবস্থা জেনেও বাংলাদেশের ডাক্তারা কেন তাকে ব্যাঙ্গালোর নিউরোলজির স্পেশালাইড হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন (!)
অথচ বাংলাদেশের ডাক্তাররা জানতেই পারেনি যে শাফির শরীরে এই মরণব্যাধি বাসা বেঁধেছে। শাফির যে লিউকেমিয়া হয়েছে সেটা বাংলাদেশে ধরাই পড়েনি।