দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিয়মিত ঝরে বহু প্রাণ! এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো আরও একটি দুর্ঘটনা। জয়পুরহাট সদরের পুরানপৈল রেলগেটে বাস ও ট্রেনের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১২ জন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, দুর্ঘটনার সময় রেল ক্রসিংটির গেট খোলা ছিল ও সংশ্লিষ্ট গেটম্যান ঘুমিয়ে ছিলেন।
চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা যায়, ‘জয়পুরহাট থেকে বাঁধন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস হিলির উদ্দেশে ছেড়ে আসে ভোরে। সকাল ৭টার কিছু আগে বাসটি পুরানাপৈল রেলগট অতিক্রম করার সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে সংঘর্ষ হয়।
ট্রেনের ধাক্কায় বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়ে ১১ জনের। আহতদের প্রথমে জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাদের বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।’
গেটম্যানের এমন অমার্জনীয় অবহেলায় এতগুলো তাজা প্রাণ মুহূর্তে ঝরে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে বলে আমরা মনে করি। দেশের আর কোনো জায়গায় যেন সংশ্লিষ্টদের এমন অবহেলা লক্ষ্যণীয় না হয়। একইসঙ্গে নিহত, আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সুচিকিৎসা সহ যাবতীয় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে নানা সময়ে উঠে এসেছে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের এমনই দুর্দশার চিত্র। এতে বলা হয়, দেশের রেলপথে ২ হাজার ৫৪১টির মতো রেলক্রসিং আছে। এর মধ্যে ২ হাজার ১৭০টিতে, অর্থাৎ ৮৫ শতাংশে কোনো গেট নেই। নেই যান নিয়ন্ত্রণের কোনো কর্মীও। নেই সংকেত বাতি। এর ফলে নিয়মিত এসব ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারান সাধারণ মানুষ। তবে শনিবারের দুর্ঘটনাস্থলে ক্রসিং থাকলেও ছিল গেটম্যানের দায়িত্বজ্ঞানহীন অবহেলা।
একথা ঠিক যে, রেলওয়ের জন্য সরকারের বরাদ্দ কম নয়। সরকার নতুন নতুন রেল লাইন তৈরি করা সহ এর উন্নয়নে সচেষ্ট। তবে এ খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার খবরও প্রায়ই গণমাধ্যমে উঠে আসে। এসব বন্ধে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।