সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসী বিরোধী কঠোর পদক্ষেপে ‘গভীর মর্মাহত’ হয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে অসহায়-নির্যাতিত শরণার্থীদের ফিরিয়ে না দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান এই পাকিস্তানী নারী অধিকার কর্মী। আমেরিকার ‘শরণার্থী ও অভিবাসীদের বরণের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের’ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মালালা। ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধাননির্বাহী মার্ক জাকারবার্গও এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রকৃত হুমকিস্বরূপদের প্রতি নজর দিয়ে সাহায্য প্রত্যাশী শরণার্থীদের জন্য দরজা খোলা রাখা উচিত বলেও মন্তব্য তার। যুক্তরাষ্ট্রকে অভিবাসীদের দেশ বলেও উল্লেখ করেন মালালা।
ট্রাম্প কঠোর অভিবাসন নীতির নির্বাহী আদেশ, যার শিরোনাম “যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশী সন্ত্রাসীদের প্রবেশ থেকে জাতিকে রক্ষা’য় স্থানীয় সময় শুক্রবার স্বাক্ষর করেন। এর বলে সিরিয়া থেকে শরণার্থী অনুপ্রবেশ পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ইরাক, সিরিয়াসহ কয়েকটি দেশের শরণার্থীদের অনুপ্রবেশও ৯০ দিনের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শরণার্থী নথিকরণ কার্যক্রম ১২০ দিনের জন্যও প্রত্যাহার করেন ট্রাম্প।
১৯ বছর বয়সী পাকিস্তানের শিক্ষা আন্দোলন কর্মী মালালা এই সাক্ষর অনুষ্ঠানের কিছুক্ষণ পরেই এক বিবৃতিতে এমন সিদ্ধান্তে মর্মপীড়া প্রকাশ করেন। বলেন, সহিংসতা-যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা শিশু, মা-বাবাদের জন্য ট্রাম্প দরজা বন্ধ করে দেয়ায় আমি মর্মাহত। বিশ্বজুড়ে অনিশ্চিয়তা ও অস্থিরতার এই সময়ে, আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলবো বিশ্বের সবচেয়ে অসহায় শিশু ও পরিবারগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন না।
“আমি মর্মাহত যে আমেরিকা তাদের শরণার্থী ও অভিবাসীদের বরণ করে নেয়ার গর্বিত ইতিহাস থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। যেসব লোকেরা (অভিবাসী) তোমাদের দেশ নির্মাণ করেছে, একটি নতুন জীবনের সুযোগের জন্য যারা কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রস্তুত। সিরিয়ান শরণার্থী শিশুদের জন্য মর্মাহত, যারা গত ছয় বছর ধরে নিজেদের কোন দোষ ছাড়াই চরম বৈষম্যের শিকার।”
বর্তমানে লন্ডনের বাসিন্দা মালালা নারী শিক্ষার পক্ষে প্রচারণা চালানোয় ২০১২ সালে তালেবান হামলায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। দীর্ঘ ও জটিল চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে উঠেন তিনি, পরে ২০১৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে শান্তিতে নোবেল পান। ভারতীয় শিক্ষা অধিকারকর্মী কৈলাশ সত্যার্থীও তার সাথে দ্বৈতভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।