সিলেট থেকে: ওয়ানডে সংস্করণে ছিলেন রানের মধ্যেই। ছিলেন দলে আসা-যাওয়ার মধ্যেও। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে রানের ফল্গুধারা ছুটিয়ে নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন ইমরুল কায়েস। সেখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না এ ওপেনারের সংগ্রাম। যে সংস্করণে অপরিহার্য ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচিত হন, সেখানে গত তিন বছর ধরে অনুজ্জ্বল এ বাঁহাতির ব্যাট। আসল চ্যালেঞ্জ তাই টেস্টে।
টেস্টে ইমরুলের সবশেষ ফিফটি ১৬ ইনিংস আগে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৭৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। সেটিই শেষ ফিফটি। পরে দশবার পেরিয়েছেন দুই অঙ্ক। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। সদ্যগত ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যেভাবে ব্যাট করেছেন, তাতে ইমরুলকে ঘিরে প্রত্যাশা বেড়েছে।
ওয়ানডে সিরিজে দুই সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে ৩৪৯ রান করা ইমরুল ফর্মটা টেনে নিতে পারবেন টেস্টে? সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে সতীর্থদের যখন টিম হোটেলে ফিরে যাওয়ার তাড়া, তখন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন ইমরুল। জানালেন, সাদা পোশাক ঘিরে নিজের ভাবনার কথা।
‘বলা সহজ, করাটা কঠিন। চেষ্টা করব রান করার। হ্যাঁ, গত এক বছর টেস্টে ভালো খেলিনি। আগে ভালো খেলেছি সেটা তো মাথায় আছে। একটা সময় মানুষের খারাপ যায়। ওই জিনিসটা নিয়ে চিন্তা না করাই ভালো। একটা সময় বড় দলের বিপক্ষে রান করেছি। জানি ওই জায়গায় কীভাবে সামলাতে হয়। চেষ্টা করব ভালোভাবে টিকে যাওয়ার।’
ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচে ইমরুলের রানের যোগফল ৩৪৯! মিরপুরে খেলেছেন ১৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। চট্টগ্রামে ৯০ ও ১১৫। ওয়ানডে সিরিজে রান করে যে আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন সেটা সঞ্চার করতে চান লাল বলেও।
‘যদি রানে থাকেন, কীভাবে রান করবেন সেটা মাথায় সাজানো থাকে। এটা ওয়ানডে, টেস্ট বা টি-টুয়েন্টি হোক। জিনিসটাই হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। সবাই জানি, যখন রানে থাকি না তখন মনে কিছুটা সন্দেহ কাজ করে। চেষ্টা করছি যে আত্মবিশ্বাস আছে, টেস্টে সেটা কাজে লাগাতে।’
গেল দুই বছর টেস্টে রান না পেলেও ওয়ানডেতে ঠিকই রান পেয়েছেন ইমরুল। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে সবশেষ ১৭ ইনিংসে ছিল একটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি ফিফটি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে যোগ হল আরও দুটি সেঞ্চুরি ও একটি ফিফটি। সঙ্গে খেলার ধরণ, স্ট্রাইকরেট দেখে বুঝতে বাকি থাকছে না যে বদলে গেছেন ইমরুল! পরিবর্তনটা নিজের মাঝেও দেখেন ইমরুল। আগে ফিফটি পেরোলেই যে ইনিংস থেমে যেত, এখন সেটি যাচ্ছে তিন অঙ্কে।
‘আগে বড় বড় দলের বিপক্ষে রান করেছি। কিন্তু দেখা গেল ৫০-৬০-৭০ রানে থেমে গেছে। ইনিংসটা বড় করতে পারিনি। বড় করতে পারলে বলতে পারতেন আপনি অনেক পরিণত ব্যাটসম্যান, ধারাবাহিক। যদি দেখেন, ২০১০ সালে প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি রান করেছি। তখন কিন্তু অনেককিছু বলা হয়নি এটা নিয়ে। কারণ আমার সেঞ্চুরি কম ছিল। এখন সেঞ্চুরি করেছি বলে সবার চোখে পড়েছে। আগেও রান করেছি, কিন্তু বড় করতে পারিনি। এখন চেষ্টা করি সেট হয়ে গেলে ইনিংসটা বড় করতে। দলের প্রয়োজনমত খেলতে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও নেই তামিম ইকবাল। ওয়ানডের মতো টেস্টেও একাদশে বা টপঅর্ডারেই সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানটির নাম থাকবে ইমরুল। সবাই তাকিয়ে থাকবে তার ব্যাটের দিকেই, ‘ওয়ানডেতে তো এটাই ছিল। ওভাবে চিন্তা করিনি। চেষ্টা করছি নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে। পরিকল্পনা থাকবে নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে।’