বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অংশে বিরাট সংখ্যক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বাস যারা সমতলের আদিবাসী হিসেবে পরিচিত। এই অঞ্চলসমূহে বসবাসকারী আদিবাসীদের মধ্যে সাঁওতাল, ওঁরাও, কোচ, মুন্ডা, মাহাতো, ডালু, মাহালী, পাহান, পাড়াড়িয়া, তুরি, রাজবংশী, রাই, পাত্র প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর বসবাস। আলোচ্য শিরোনামে তাদের নিয়ে আলোচনা করার প্রধান কারণ-তারা সমাজের আর দশজন মূল স্রোতধারার মানুষের মতো সুযোগ-সুবিধা সমানভাবে ভোগ করতে পারে না। তারা শিক্ষায়, স্বাস্থ্যে, চাকুরী প্রাপ্তিতে, আয়সহ দৈনন্দিন নানা বৈষম্যের শিকার, এককথায় তাদের যাপিত জীবন বৈষম্যে ভরা। আজ যখন চারিদিকে সবার জন্য সমান উন্নয়নের দাবী উচ্চারিত হচ্ছে তখন সমতলের এই আদিবাসীদের উন্নয়নের বিষয়টি অতি অবশ্যই প্রধান অগ্রাধিকারের দাবী রাখে।
সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতা:
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ‘‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য গৃহিত উন্নয়ন কর্মসূচি” তে সমতলের আদিবাসী মানুষের সংখ্যা ২০১১ সালের জাতীয় জারিপ অনুযায়ী উল্লেখ করা হয়েছে ১৫ লক্ষ ৮৬ হাজার এর কিছু বেশী। ফিলিপ গাইন সম্পাদিত Survival on the fringe: Adibashis of Bangladesh বইতে জাতীয় জারিপ ১৯৯১ ও ২০০১ কে ভিত্তি ধরে বলা হয়েছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের মোট জনসংখ্যার ১.৫% হলো আদিবাসী যারা মোট আদিবাসী সংখ্যার ২৫.৭৭%। উত্তর-মধ্যাঞ্চলে গারোদের সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার কিন্তু অন্য একটি গবেষণায় যাদের সংখ্যা বলা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ। এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আদিবাসীদের সংখ্যা ঐ অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ১.১৩% যা জনসংখ্যার দিক থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজারের অধিক। এছাড়া উপকূলীয় জেলাগুলোতে আদিবাসী জনসংখ্যা পঞ্চাশ হাজারেরও অধিক। কিন্তু আদিবাসী সংগঠন এবং অন্যান্য গবেষণায় আদিবাসী মানুষের সংখ্যা আরও অনেক বেশী বলে তারা দাবী করে আসছেন। এক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের দাবী হলো-সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য জরিপ পরিচালনা করে প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করা।
আদিবাসীদের প্রকৃত সংখ্যা, তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকা একটি অন্যতম বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। তবে সমতলের আদিবাসীদের প্রধান পেশা এখনও কৃষি। যাদের ভূমি আছে তারা কৃষি উৎপাদনের সাথে যুক্ত আর যারা ভূমিহীন তারা মূলত কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া পশুপালন, বাঁশ-বেতের কাজ ও মাছচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের জীবিকায়নেও বৈচিত্র্যের ছোঁয়া লেগেছে। তারা সাধারণত গ্রামের প্রান্তে, মূলভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে বসবাস করে। কারণ প্রায়শই তারা খাস বা অন্যের জমিতে বসবাস করতে বাধ্য হয়। যারা বাপ-দাদার জমিতে বসবাস করছেন বলে দাবী করেন তাদেরও বেশীর ভাগেরই উপযুক্ত দলিলাদি নেই।
সমতলের আদিবাসীরা যেহেতু পাহাড়ের আদিবাসীদের মতো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বসবাস করে না তাই তাদের রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হওয়াও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। যার অনিবার্য ফল হিসেবে দেখা যায় সমতলের আদিবাসীরা রাজনৈতিকভাবে তেমন কোথাও প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। জাতীয় সংসদসহ কোথাও তাদের পক্ষের কোনো প্রতিনিধি নেই বলেই চলে।
যাহোক, সমতলের আদিবাসীদের এই যে পশ্চাৎপদতা তার অনেকগুলো কারণ উপরে বর্ণিত হয়েছে। এখন এইরকম একটি বাস্তবতায় আমরা দেশে এসডিজি বাস্তবায়ন করছি। সরকার বলছে- কাউকে পিছিয়ে রেখে নয় বরং সবাইকে সাথে নিয়ে এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু এই যে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী তারা কীভাবে এগিয়ে আসবে? তাদের কীভাবে এগিয়ে নেয়া হবে? আমরা যতদূর জানি-সরকার এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য মূলত উদ্যোগ নেবে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে। সরকারের ভাষ্যমতে, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তার প্রতিফলন রয়েছে। কিন্তু সরকারের আন্তরিক ইচ্ছা এবং কাগজপত্রে উল্লেখ থাকলেই কী পিছিয়ে পড়াদের এগিয়ে আসা নিশ্চিত হবে?
না, হবে না। কারণ বাংলাদেশের সরকার তার সকল জাতীয় ও আন্তজার্তিক অঙ্গীকারে কারও জন্য কোনো বৈষম্যকে উৎসাহিত করেনি। তারপরও কেনো এই হাজার মাইলের দূরত্ব তৈরী হলো? দেশের একটা বিরাট সংখ্যক মানুষ কেনো এখনও উন্নয়নের মহাসড়কে উঠতে পারছে না? এখানে প্রসঙ্গক্রমে দেখে নেয়া যাক রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের অঙ্গীকারগুলো।
সংবিধানের ২৬-৪৭ ধারাসমূহে মানুষের নানাবিধ অধিকারের প্রাপ্তির ব্যাপারে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। শুরুতে অর্থাৎ ২৬(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “এই ভাগের বিধানাবলীর সহিত অসামঞ্জস্য সকল প্রচলিত আইন যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এই সংবিধান প্রবর্তন হইতে সেই সকল আইনের ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে” এবং ২৬(২)-এ বলা হয়েছে, “রাষ্ট্র এই ভাগের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য কোন আইন প্রণয়ণ করিবেন না এবং অনুরূপ কোন আইন প্রণীত হইলে তাহা এই ভাগের কোন বিধানের সহিত যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে ।” পরবর্তী অনুচ্ছেদগুলোয় মানুষ হিসেবে একজন ব্যক্তির সার্বিক অধিকার সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে, সেখানে কোন প্রকার ধর্মীয়, বর্ণগত, গোষ্ঠীভিত্তিক, লিঙ্গভিত্তিক, জন্মভিত্তিক ইত্যাকার বৈষম্য প্রদর্শন করার কোন সুযোগ নেই।
এছাড়া ২৭, ২৮ (১) এবং ২৯ (১) ও (২) অনুচ্ছেদেও একই কথা বলা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র ১৯৪৮-এর প্রথম ধারায় বলা হয়েছে, “সকল মানুষই (শৃঙ্খলহীন) স্বাধীন অবস্থায় এবং সম-মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তারা সকলেই বুদ্ধি ও বিবেকের অধিকারী।” আর, দ্বিতীয় ধারায় বলা হয়েছে, “যেকোন প্রকার পার্থক্য, যেমন জাতি, গোত্র, বর্ণ, নারী-পুরুষ, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক বা অন্য মতবাদ, জাতীয় বা সামাজিক উৎপত্তি, সম্মতি, জন্ম বা অন্য মর্যাদা নির্বিশেষে সকলেই উল্লিখিত সকল অধিকারের অংশীদার। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সংক্রান্ত চুক্তিপত্র-১৯৬৬-এর ধারা ২ এ বলা হয়েছে- চুক্তিপত্র সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষ নিশ্চয়তা সাপেক্ষে অঙ্গীকার করছে যে, বর্তমান চুক্তিপত্রে উচ্চারিত অধিকারসমূহ জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক অথবা অন্য মতাদর্শ, জাতীয় ও সামাজিক উৎস, সম্পদ, জন্মগত ও অন্যান্য অবস্থানগত কারণ নির্বিশেষে কোন রকম বৈষম্য ছাড়াই অনুশীলিত হবে। নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন-১৯৬৬ এর ধারা-২ এ বলা হয়েছে- এ চুক্তির প্রত্যেক রাষ্ট্রপক্ষ বর্তমান চুক্তিপত্রে স্বীকৃত অধিকারসমূহ সকলের জন্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং এক্ষেত্রে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক অথবা অন্য মতাদর্শ, জাতীয় ও সামাজিক উৎস, সম্পদ, জন্মগত ও অন্যান্য অবস্থানগত কারণ নির্বিশেষে কোন রকম পার্থক্য থাকবে না।
এতসব অঙ্গীকারের থেকে এটা দিয়ে বলা যায় যে, সংবিধান, আইন ও আন্তর্জাতিক দলিলসমূহ প্রণয়নের সাথে যারা যুক্ত এবং যে সকল রাষ্ট্রপক্ষ এগুলোতে স্বাক্ষর করেছে তারা মানুষে মানুষে সমতার নীতিরই প্রতিধ্বনি করেছেন। তারা অন্তত কাগজে-কলমে কোথাও বৈষম্য, বঞ্চনা বা বিভেদের ভেদবুদ্ধিকে প্রশ্রয় দেয়নি। কিন্তু এতসব অঙ্গীকার সত্বেও এবং বিগত দুইদশক ধরে চলমান ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকার ফলে অর্জিত ৬শতাংশের উপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন হলেও, মাথাপিছু আয়ের সীমা দেড়হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেলেও এখনও ২৪% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করছে। যার মধ্যে ১৫-১৬% চরম দরিদ্র অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। আর এই দরিদ্র্য ও চরম দরিদ্র মানুষের মধ্যে যারা পড়েন তাদের মধ্যে সমতলের আদিবাসীরা অন্যতম।
উপরোক্ত বাস্তবতা থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে প্রয়োজন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসডিজি-কে দেখা। কারণ অভিষ্টগুলো একটি সমতার পৃথিবী তৈরীর জন্যই গৃহিত হয়েছে। আমরা যদি অভিষ্টগুলো পর্যালোচনা করি তাহলে দেখবো যে এর প্রায় সবগুলোই সমতলের আদিবাসীদের জন্য প্রযোজ্য। তারা দরিদ্র (অভিষ্ট-১. দারিদ্র্য বিমোচন, তারা দরিদ্র বলেই ক্ষুধার মধ্যে বসবাস করে (অভিষ্ট- ২. ক্ষুধা মুক্তি, সমতলের আদিবাসীরা চিকিৎসা সেবা থেকে একরকম বঞ্চিতই বলা যায় (অভিষ্ট-৩. সুস্বাস্থ্য), শিক্ষা ক্ষেত্রে তারা এখনও অনেক পিছিয়ে(অভিষ্ট-৪. মানসম্মত শিক্ষা), তারা সুপেয় পানি ও পয়:নিস্কাষনের মারাত্মক সংকটে দিন কাটায় বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলে (অভিষ্ট-৬. সুপেয় পানি ও পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থা), সমতলের আদিবাসীরা গতানুগতিক কৃষিকাজের সাথেই এখনও জড়িত তারা কর্মবৈচিত্র্য তৈরী করতে পারছে না (অভিষ্ট-৮. কর্মসংস্থান ও অর্থনীতি), তাদের জীবন তো বৈষম্যে পূর্ণ। তারা এখনকার দিনেও মানবেতন জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে (অভিষ্ট-১০. বৈষম্য হ্রাস)। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তাদের প্রতি অত্যন্ত ব্যাপক (অভিষ্ট- ১৩. জলবায়ু বিষয়ে পদক্ষেপ), তাদের জন্য কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই (অভিষ্ট-১৬. শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান।
তাহলে সেগুলো কী গতানুগতিক আর দশটা উন্নয়ন পরিকল্পনার মতো বাস্তবায়ন হলে হবে? উত্তর এক কথায়-না। এর জন্য প্রয়োজন হবে অধিকারের বাণীকে উর্দ্ধে তুলে ধরা যার অন্যতম চালিকা শক্তি হতে পারে সর্বস্তরে সুশাসন নিশ্চিত করা। স্থানীয়ভাবে সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন বঞ্চিত মানুষের অধিকারকে জাগিয়ে তোলা। যাতে করে তারা সংগঠিত হয়ে যৌথভাবে আওয়াজ তুলতে পারে। আর এর মাধ্যমে সুশাসনের পূর্বশর্ততথা স্বচ্ছতা, জাবাবদিহিতা, আইনের শাসন, সমঅংশগ্রহণের ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। এসজিডির যে মৌলিক সুর- ‘‘কাউকে পেছনে রেখে নয়’’ তা নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে সামনে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা শুরু করা। আর এর জন্য সবগুলো অভিষ্ট যেমন দরকার তেমনি অভিষ্ট-১৬: শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দাবী উত্থাপন হতে পারে এক্ষেত্রে মুক্তির অন্যতম একটি পথ। এসডিজির লক্ষ্য ও সূচকের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে এটি সমস্যার মূলে গিয়ে আঘাত করতে চায়, সনাতনি চিন্তার খোল-নলচে পাল্টে দিয়ে সবচাইতে দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর দ্বারপ্রান্তে উন্নয়নের সূফল পৌঁছে দিতে চায়।এবং এই চলমান উন্নয়ন উদ্যোগে যারা পিছিয়ে আছে বা নানা মাত্রায় বৈষম্য ভোগ করছে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে চায় যাতে সবাই এককাতারে এসে উন্নয়নের ফসল ভোগ করতে পারে। তার জন্য বিদ্যমান নানাবিধ বৈষম্যকে রোধ করাও এসডিজি’র অন্যতম লক্ষ্য।
এসডিজি অর্জনে সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের আলোকে একটি অধিকারভিত্তিক উন্নয়ন প্রচেষ্টা গ্রহণের মাধ্যমে কাঙ্খিত পরিবর্তনের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশতুলে ধরা হলো-
সরকারের তরফ থেকে করনীয়
– সমতলের আদিবাসীরা বাংলাদেশের যে কোনও জনগোষ্ঠীর থেকে পিছিয়ে আছে। তাদের এই পশ্চাৎপদতা বহুমূখীও বটে। ফলে তাদের অধিকারকে সমুন্নত রাখা এবং বিশেষ উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে সরকারি উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই।
– সরকারি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে আদিবাসীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ ও নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে আদিবাসীরা বিশেষ ঐসকল সুবিধা নিয়ে মূল¯্রােতধারার মানুষের সাথে এক কাতারে সামিল হতে পারে।
– স্থানীয় সরকার ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে আদিবাসীদের এগিয়ে নিতে বিশেষ কোটা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। যাতে করে যারা ক্ষমতাকাঠামোয় যুক্ত হয়ে নিজেদের দাবী-দাওয়াগুলো তুলে ধরতে পারে। যা সূদূরপ্রসারী পরিবর্তনের সূচনা করবে।
বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠানের পক্ষে করনীয়
– সরকারের পাশাপাশি সহযোগী ভূমিকায় এনজিওরা বিশেষ দায়িত্ব পালন করে চলেছে। ফলে তারা নতুন নতুন উদ্ধাবনী কাজের নজির সৃষ্টি করে আদিবাসীদের জন্য এগিয়ে আসতে পারে। সেটা হতে পারে ব্যবস্থাপনাগত অথবা অন্য কিছু।
– আদিবাসীদের সংগঠিত করা একটি বড় কাজ। যে সকল এলাকায় আদিবাসীদের বাস সেখানে স্থানীয় কমিউিনিটি ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তোলা এবং তাদের ক্যাপাসিটি তৈরী করা একটি অন্যতম অগ্রাধিকার হতে পারে।
– আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য হালনাগাদ তথ্য প্রদান একটি অন্যতম কাজ। তারা যদি সরকারি-বেসরকারি সেবাসমূহ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পায় তার জন্য এনজিও কাজ করতে পারে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)