শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকায় পরিচালিত ‘লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘ’ দেশের তরুণদের মাদকের হাত থেকে দূরে রাখতে পরিচালনা করে যাচ্ছে মাদকবিরোধী প্রচারণা। দেশের প্রতিটি জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ’ নামে মাদকবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটির এক তরুণ।
দেশের প্রতিটি জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাখ শিক্ষার্থীদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে অন্য রকম এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কাওসার আলম সোহেল। ৮ সেপ্টেম্বর টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে কার্যক্রমের মাধ্যমেই সমাপ্তি হবে এ অভিযাত্রার।
শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকায় পরিচালিত ‘লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘ’ নামের স্বেচ্ছাসেবী এক সংগঠটির ব্যানারে মাদকের পাশাপাশি বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং ও দুর্নীতিকেও ‘লাল কার্ড’ প্রদর্শন করা হচ্ছে। ১৮৫ দিন ধরে সংগঠনটি পঞ্চগড় থেকে কক্সবাজারের প্রতিটি জেলাতেই আলোকিত বাংলাদেশের আওয়াজ তুলেছে সমানতালে।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল জানান, প্রায় ৩ বছরের জমানো টাকা নিয়ে গত ৮ মার্চ পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া থেকে শুরু হয় এ অভিযান। ৬ মাস পর ৬ সেপ্টেম্বরে এসে ৬৪তম জেলা হিসেবে কক্সবাজার শহরের কলাতলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাদের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হলো। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শপথ পাঠ করান কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন।
প্রতিটি জেলায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিত রেখেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠাটি ৩টি ধাপে ভাগ করা ছিলো, প্রথমত স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা মাদক, ইভটিজিং, বাল্য বিবাহ, ধর্ষণ ও দুর্নীতিকে লাল কার্ড প্রদর্শন করে সকল অন্যায়কে না বলা এবং দেশপ্রেম, মানবতা ও সত্যবাদিতাকে সবুজ কার্ড প্রদর্শন করে হ্যাঁ বলা।
তারপর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সরকারি কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের শপথ পাঠ করান। শপথ শেষে শিক্ষার্থীরা নানান সমস্যা নিয়ে সরাসরি কথা বলেন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে।
লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ সংগঠনটি ২০১১ সালের ২৪ মে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার পশ্চিম নোয়াদ্দা গ্রামে কাওসার আলম সোহেল তার জমানো টাকা ও ছোট বোন ফারজানা আক্তার সুমীর সেনা কল্যাণ থেকে বৃত্তি ও একজোড়া কানের দুল বিক্রির টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বৃক্ষরোপণ ও মাদক, ইভটিজিং ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে আসছেন।