এখনো যারা করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নেয়নি, তাদেরকে দ্রুত টিকা নিয়ে সুরক্ষিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি মনে করেন, দেশের মানুষ সুরক্ষিত থাকলে; দেশ সুরক্ষিত থাকবে। সেই সুরক্ষার মূলমন্ত্র হলো- দ্রুত টিকার প্রথম ডোজ নেয়া। তাহলে দ্রুতই দেশ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে পারবে।
সরকার এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে আগামী সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার, ‘বিশেষ টিকা ক্যাম্পেইন’ এর মাধ্যমে সারাদেশে অন্তত ১ কোটি মানুষকে করোনা টিকা দেওয়া হবে। তবে সেদিন অগ্রাধিকার পাবে এখনো প্রথম ডোজ টিকা না নেয়া ব্যক্তিরা। সেদিনের পর থেকে টিকার স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও তা হবে সীমিত পরিসরে। অর্থাৎ দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।
কয়েকদিন আগেই (১৫ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার বা ২৬ তারিখের পর করোনা টিকার আর প্রথম ডোজ দেয়া হবে না। ওইদিনের পর দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার ডোজ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তার মনে টিকা না নেয়া ব্যক্তিদের জন্য এটা এক বড় সুযোগ। কেননা কোনো রকম পূর্ব রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধনের মতো নথিপত্র ছাড়া সরাসরি কেন্দ্রে গিয়েই সেদিন টিকা নেয়া যাবে। এর জন্য প্রয়োজন শুধু স্বেচ্ছায় টিকা কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া।
এটা ঠিক, আগের দিনগুলোতে টিকার সরবরাহে ঘাটতির কারণে মানুষকে নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। আগে রেজিস্ট্রেশন করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে। এমনকি নির্ধারিত দিনে কেন্দ্রে গিয়েও টিকা নিতে পারেনি অনেক মানুষ। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সরকারের হিসাব মতে, এরই মধ্যে ১৮ কোটি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সরকার সংশ্লিষ্টরা মনে করছে, যে বয়সীদেরকে করোনা টিকা দেওয়া প্রয়োজন, এরই মধ্যে তা হয়ে গেছে। এখন যে সংখ্যক মানুষ বাকি আছে, তা শনিবারই হয়ে যাবে।
টিকার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। করোনা কেন্দ্রীক সব বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছে। আজকের পর থেকে আমাদের দেশেও স্বাস্থ্যবিধি ছাড়া অন্যান্য বিধিনিষেধ উঠে যাচ্ছে। খুলে গেছে বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত দুই বছরেরও বেশি সময় মানুষ যা চাইছিল, সেটাই হতে যাচ্ছে। তবে করোনা নিয়ে অবহেলা করা যাবে না। তাতে বিধিবাম হতে পারে। নতুন কোনো রূপে তুমুল শক্তি নিয়ে আবার ফিরে আসতে পারে ব্যাপক প্রাণঘাতি এ ভাইরাসটি।
সম্প্রতি দেশে-বিদেশে অনেকগুলো সমীক্ষায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর যারা মারা গেছে, তাদের বেশিরভাগের টিকা নেয়া ছিল না। পাশাপাশি টিকা নিয়েছেন, এমন ব্যক্তিরা সংক্রমিত হলেও মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার কম।
তাই সবদিক বিবেচনায়, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে চাইলে অবশ্যই সবাইকে টিকা নিতেই হবে।