নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে নারী স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধরের অভিযোগে আটপাড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেলার আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে গত বুধবার রাতে।
ইউনিয়নের রূপচন্দ্রপুর গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মী সুরাইয়া আক্তারকে মারধর করার অভিযোগ এনে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. শরীফ আহমেদ।
আটপাড়া থানার ওসি মো. জাফর ইকবাল সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও স্বাস্থ্য কর্মীকে মারধরের অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়। ঘটনার পরপরই আসামি পালিয়েছে। তবে আমরা গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ নূর মোহাম্মদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইনচার্জ শংকর কুমার রায় বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে হাম রুবেলার টিকা দেওয়া শুরু হয়। তখন ওই নেতার নাতি বাড়ি ছিল না। পরে বাড়ি আসলে ওই শিশুকে টিকা দেয়া হয়েছে পার্শ্ববর্তী কেন্দ্রে। কিন্তু বুধবার দুপুরে পুনরায় টিকাদান করার সময় সুরাইয়াকে শাসাতে আসেন ওই নেতা। বলেন, তার নাতিকে টিকা কেন দেয়নি। এরপরে কেন তার বাড়িসহ অন্য বাড়িতে যায় না এসব বলতে থাকে। এগুলোর জবাব দিতে থাকলে তার উপর হাত উঠায়। নিজের মাফলার দিয়ে সুরাইয়ায় গলায় পেঁচিয়ে বলে এভাবে পুকুরে ফেলে মেরে ফেলব।
অন্যদিকে লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার আটপাড়ার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী সুরাইয়া আক্তার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের পূর্বপাড়া খা বাড়িতে মঙ্গলবার হাম রুবেলা টিকা দেয়ার কথা ছিল। ওই দিন সুরাইয়া আক্তার যেতে পারেননি। পরে বুধবার ওই গ্রামে টিকা প্রদান করতে গেলে শেখ নূর মোহাম্মদের সাথে তার কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে নূর মোহাম্মদ উত্তেজিত হয়ে স্বাস্থ্যকর্মী সুরাইয়া আক্তারকে মারধর করেন। এসময় তার সাথে থাকা সহকারীকেও মারধর করেন নূর মোহাম্মদ।
বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা কর্মচারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শরীফ আহম্মেদ জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার জনস্বাস্থ্য সেবায় বিঘ্ন ঘটবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।