টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মেয়েটির মা। মূল অভিযুক্ত মাসুদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
থানায় করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের সিংহরাগী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে বখাটে মাসুদ দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রীকে প্রাইভেটে যাওয়া আসার পথে বিরক্ত করতো। এর ধারাবাহিকতায় গেল ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ছাত্রীকে বাড়ির সামনে আসতে বলে সে। পরে ছাত্রীটি বাড়ীর সামনে গেলে মাসুদসহ অন্য মুখোশ পড়া দুইজন জোর করে নৌকায় তুলে বিলের মধ্যে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা।’
বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর।
প্রাণনাশের হুমকিতে প্রথমে বিষয়টি গোপন রাখলেও মঙ্গলবার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে পরিবারকে জানায় সে।
পরে ঘটনাটি থানায় অবহিত করে ভর্তি করা হয় দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বর্তমানে মেয়েটি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
মেয়েটির শারীরিক অবস্থা ও ফলাফল জানতে বৃহস্পতিবার সকালে মেডিক্যাল টিম গঠন করার কথা জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নির্যাতিতা ওই স্কুল ছাত্রী জানান, সন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ের আড়ালে নৌকা নিয়ে লুকিয়ে ছিলো মাসুদসহ ৩জন। সেখানে গেলে পেছন থেকে দুই জন আমার মুখ চেপে ধরে নৌকায় তুলে নিয়ে যায়। এসময় জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তারা। চিৎকার করার চেষ্টা করলে গলা চেপে ধরে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে বাড়ির কিছু দুরে ক্লাবের পাশে নামিয়ে দেয়। নির্যাতানের বিষয়ে কাউকে কিছু বললে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি এতোদিন।
ওই স্কুল ছাত্রীর মা জানান, মেয়েকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে মোবাইল ফোনের এসএমএস দেখে আমার ছেলে ওই নম্বরে ফোন দিলে তারা বাড়ির পাশের ক্লাবের পেছনে নামিয়ে দিয়ে যায়। মেয়ে লজ্জায় কাউকে কিছু বলেনি। শরিরীক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ৪ দিন পর পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। নির্যাতনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান নির্যাতনের শিকার স্কুল ছাত্রীর মা।
স্কুল ছাত্রীর বাবা জানান, মঙ্গলবার মেয়ে তার নানীর কাছে তিনজন মিলে তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানায়। স্থানীয় মেম্বারকে বিষটি জানালে তিনি দ্রুত মামলা করার পরামর্শ দিয়ে দেলদুয়ার থানায় পাঠায়। আমি গিয়ে মামলা করি। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তারা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ছেলের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় এখানে আসার পর বিভিন্নভাবে আমার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে।
তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে আসার পর দেলদুয়ার থানার ওসি আমাকে ফোন করে বলে মেয়ে নিয়ে থানায় যাওয়ার জন্য। যেতে না চাইলে জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন ওই পুলিশ সদস্য। পরে সংবাদকর্মীরা হাসপাতালে আসায় তাদের লোকজন চলে যায়।