টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে কৌশলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করে বিপুল পরিমাণ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর কাজে জড়িত রয়েছে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার, নকল নবিশ, পিয়ন ও দলিল লেখকদের একটি চক্র।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই চক্রটি সরকার নির্ধারিত ও জমির প্রকৃত মুল্যের চেয়ে দলিলে কম মূল্য দেখিয়ে দলিল সম্পাদন, কান্দা (উঁচু) শ্রেণির জমিকে নামা এবং নামা শ্রেণির জমিকে বালু মহলসহ নানা জালিয়াতি পন্থা গ্রহণ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকির এই টাকা রেজিস্ট্রার, নকল নবিশ, পিয়ন ও দলিল লেখকরা ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন। চলতি বছরে একদিনে সম্পাদন হওয়া ৩টি দলিলেই সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৭৮ হাজার ২শ টাকা।
২৩ জানুয়ারি সম্পাদিত ২২৩ নং দলিলে জমির প্রকৃত মূল্য ১৫ লাখ ২১ হাজার টাকার বদলে সম্পাদিত দলিলে ৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা। ২২৪ নং দলিলে জমির প্রকৃত মূল্য ১৫ লাখ ২১ হাজার টাকার বদলে দেখানো হয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার। এছাড়াও ২২৫ নং দলিলে জমির প্রকৃত মূল্য ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকার স্থলে ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এসব অনিয়ম করা হচ্ছে ভুয়া কাগজ-পত্র তৈরি করে। আর প্রতিদিন জালিয়াতি করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
ভূঞাপুর মৌজার ৪৫৯ নং দাগে মাঠপর্যায় দেখা যায় জমির শ্রেণি কান্দা কিন্তু সেখানে বিক্রিত দলিলে নামা লেখা হয়েছে। এছাড়া বেতুয়া পলিশার মৌজার ১৭৩৯ দাগে মাঠ পর্চায় কান্দা উল্লেখ থাকলেও সম্পাদিত ১০৫ নং দলিলে নামা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিনিয়তই ওই চক্রটি এসব অনিয়ম করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। আর এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে একাধিক কর্মদিবসে অফিসে গিয়েও ভূঞাপুর সাব-রেজিস্ট্রার মনিষা রায়কে পাওয়া যায়নি।
গত পনের দিনে পাঁচদিন তার অফিসে যোগাযোগ করে না পেয়ে পুনরায় রোববার তার কার্যালয়ে গেলে তিনি অনুপস্থিত আছেন বলে জানায় ওই অফিসের কর্মচারীরা। পরে এবিষয়ে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।