চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

জেলায় জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইন

দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনা ভাইরাস সন্দেহে বিদেশ ফেরতসহ সর্দি-কাশি ও জ্বর আছে এমন ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

গত মঙ্গলবার থেকে বুধবার সকাল ১১ পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ৩৭ জন এবং মুন্সীগঞ্জে ৮৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়।

সাতক্ষীরা
চ্যানেল আই অনলাইনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, জেলাটিতে ৩৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া  হয়েছে। সম্প্রতি তারা সবাই বিভিন্ন দেশে থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন।

সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত জানান, সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত ৩৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘এসব ব্যক্তিরা যেন ঘরের বাইরে ঘোরাফেরা না করে সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের উপর স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ ও গ্রাম পুলিশকে নজরদারিতে রাখতে বলা হয়েছে। কেউ নির্দেশনা অমান্য করলে তাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

মুন্সীগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জজেলার ছয় উপজেলায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আরও ১৫ জনসহ মোট ৮৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন আবুল কালাম আজাদ জানান, জেলার ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৮৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।

তাদেরকে বাইরে ঘোরাফেরা না করে বাসায় অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত জেলার ১০২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

মাদারীপুর
মাদারীপুরে হোম কোয়ারেন্টাইনে ২২০ জন ও আইসোলেশনে ৪ জনকে রাখা হয়েছে,হোম কোয়ারেন্টাইন না মানায় ২ জনকে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জেলাটিতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের আশঙ্কায় হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে বাহিরে ঘোরাফেরার দায়ে মাদারীপুরে এক স্পেন ফেরত প্রবাসীকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের কারাদণ্ড ও এক ইতালি প্রবাসীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার বেলা ১টার দিকে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

এছাড়া মাদারীপুরে ২২০ জন হোম কোয়রেন্টাইনে ও ৪ জন আইসোলেশনে রয়েছে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম।

জানা গেছে, মাদারীপুরে বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি সময়ে করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশ থেকে ২ শতাধিক মানুষ মাদারীপুরে আসে। এদের দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় ২২০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।

স্থানীয়রা জানান, এক ইতালি প্রবাসী সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরে আসেন। করোনাভাইরাসের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে তার স্ত্রী সন্তানসহ ৪ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এছাড়াও তার সন্তানরা যাদের সাথে সংস্পর্শে এসেছে এমন ১৯ শিক্ষার্থীকে চিহ্নত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।

শরীয়তপুর
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনকে অবমুক্ত ও ৩৪ জনকে সংযুক্ত করায় এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২২৩জন।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ও চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আইসোলেশন ইউনিট ও কোয়ারেন্টাইন ইউনিট প্রস্তুত রেখেছে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ৫শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দিনাজপুর

দিনাজপুরে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের আশঙ্কায় ৪ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।  প্রবাসীরা কাতার, সৌদি আরব, ওমান এবং কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন।

দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস এর সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, জেলার সদর উপজেলায় একজন, হাকিমপুর উপজেলার দু’জন ও নবাবগঞ্জ উপজেলার একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের আশঙ্কায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।  স্বাস্থ্য বিভাগের গঠিত কমিটি তাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।  সেই সাথে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ওই প্রবাসীরা যাতে বাড়ি থেকে বাহিরে, হাট-বাজারে এবং জনসমাগমে চলাফেরা না করেন সেজন্য সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বক্ষণ কন্ট্রোল রুম চালু রয়েছে। দিনাজপুর এম.আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ উপজেলার হাসপাতালগুলোতে খোলা হয়েছে আইসোলেশন ইউনিট।

বান্দরবান

বান্দরবানে করোনা সন্দেহে চীন প্রবাসী এক নারীসহ একই পরিবারের ৫ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

এছাড়াও জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ১০০ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।