মার্কিন দূতাবাস ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেছেন, ‘আমার সরকার মার্কিন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যেন তারা নিজ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং আন্তর্জাতিক সম্মতি অনুসারে ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের বৈধ অধিকার ফিরে পাবার সুযোগ দেয়। কেননা আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্ত জেরুজালেম বা অন্যান্য দখলকৃত এলাকাগুলোতে ফিলিস্তিনিদের দৃঢ় অধিকার পরিবর্তন বা খর্ব করতে পারবে না। কিন্তু এটা শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা এবং এই প্রক্রিয়ার দেশটির এতদিনের অবস্থানের বদলই প্রকাশ করে।’
মিশরের কায়রোতে আরব লিগের বৈঠকে আল-জুবায়ের বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বের অবসান ঘটানোর উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক ও আরব পিস ইনিশিয়েটিভের নীতিমালার ভিত্তিতে স্থায়ী, ন্যায্য এবং বোধগম্য সমাধানের কাঠামোর মধ্য দিয়ে শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানাই। যেন ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র ও পূর্ব জেরুজালেমকে সেই রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে পাবার আইনি অধিকার নিশ্চিত হয়। একই সঙ্গে যেন ওই অঞ্চল এবং পুরো বিশ্বে তাদের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়।’
রাজধানী ঘোষণার ঘটনায় পশ্চিম তীর ও গাজা উপকূল জুড়ে চলা বিক্ষোভ ও সহিংসতার তৃতীয় দিনে আরব দেশগুলোর জোট আরব লিগের ২২ সদস্য রাষ্ট্র এক বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে বলা হয়, জেরুজালেমকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দান মধ্যপ্রাচ্যকে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায় নিমজ্জিত হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে বলে আশঙ্কা করছে আরব লিগ।
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকার করে নেয়ার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রধান স্পর্শকাতর ইস্যু ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষ অবস্থানের সমাপ্তি ঘটিয়েছে। আরব লিগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের অর্থ হলো, যুক্তরাষ্ট্রকে এখন আর মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভরসা করা যায় না।
মিশরের কায়রোতে অবস্থিত সদর দপ্তরে টানা কয়েক ঘণ্টার আলোচনা শেষে বাংলাদেশ সময় রোববার সকাল ৭টায় আরব লিগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এসব সিদ্ধান্তে পৌঁছান। ওই সিদ্ধান্তে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং জর্ডানসহ যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্রও ছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প অপ্রয়োজনীয়ভাবে আগে থেকেই অস্থির একটি অঞ্চলকে আরও বেশি সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।