‘অর্থহীন’ ব্যান্ডের সুমনকে চেনেন না এমন বাঙালি শ্রোতা পাওয়া দুস্কর। ব্যান্ডটির লিড ভোকাল ছাড়াও বেইজ গিটারিস্ট হিসেবে খ্যাতি তার। এজন্য তিনি ‘বেজবাবা সুমন’ নামেও অনুরাগীদের কাছে বেশ পরিচিত।
ভক্ত অনুরাগীদের কাছে হয়তো বিষয়টি অজানা, সেই সুমন মেইনস্ট্রিমে বেইজিস্ট হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন- তিনি নগর বাউল খ্যাত জেমস!
হ্যাঁ, জেমসের ৫৭তম জন্মদিন উপলক্ষে সেই অজানা গল্পই জানিয়েছেন সুমন। একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে জেমসকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজের বেইজ গিটারিস্ট হওয়ার পেছনের ঘটনাও জানালেন সুমন। কীভাবে জেমসের ‘ফিলিংস’ এ সুযোগ পেয়েছিলেন, সেই সময়ের গল্পটাও জানালেন এই শিল্পী।
সুমন লেখেন, আমি তখন সবে মাত্র এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমার এক বন্ধু ইমন একদিন আমাকে জেমস ভাইয়ের বাসায় নিয়ে গেলো। আমার নাকি সেখানে তাদের সাথে জ্যাম করতে হবে। আমার নিজের কোন বেইজ গিটার ছিলোনা। বন্ধুর কাছ থেকে একটা বেইজ নিয়ে অনেক নার্ভাস অবস্থায় গেলাম জেমস ভাইয়ের বাসায়। সেখানে জেমস ভাইসহ ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের সবাই প্র্যাকটিস করছিলো। শুধু কোন বেইজিস্ট ছিলো না। আমাকে জেমস ভাই বলল বেইজ ধরো। আমি ভয়ঙ্কর নার্ভাস অবস্থায় তাদের সাথে বাজানো শুরু করলাম। বেশ কিছুক্ষণ জ্যাম আর আড্ডা দেবার পর আমি অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসলাম। নেক্সট কবে আবার প্র্যাকটিসে আসতে হবে সেটা আমাকে জানিয়ে দিল।
লেখার এ পর্যায়ে সুমন বলেন, আমি বের হয়ে যাবার সময় জেমস ভাই বললেন ‘ওয়েলকাম টু ফিলিংস’। আমার সে সময়ের অনুভূতিটা লিখে বোঝানো সম্ভব না। একটা ছেলে যে কিনা এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের জন্য বসে আছে, বুকে অনেক স্বপ্ন, একদিন এরকম একটা ব্যান্ড বানাবো যেই ব্যান্ডকে দেশের মানুষজন চিনবে, তাকে জেমস ভাই বলছে ‘ওয়েলকাম টু ফিলিংস’!
সুমন বলেন, টিনেজার একটা ছেলের, যার নিজের কোনও বেইজ গিটার নেই, তার ফিলিংস এর মত একটা মেইনস্ট্রিম ব্যান্ড এ জয়েন করাটা চিন্তা করতে পারেন? অনেক অনেক বছর আগে জেমস ভাই কিন্তু ঠিকই ব্যাপারটা খুব সহজভাবেই চিন্তা করেছিলো। আমাকে মেইনস্ট্রিমে বেইজিস্ট হিসেবে খুব সহজে জায়গা করে দেয়ার পেছনে এই মানুষটার অবদান অনেক!
একক ক্যারিয়ার শুরুর আগে ওয়ারফেইজ এবং ফিলিংস ব্যান্ডে বেইজিস্ট হিসেবে কাজ করেন সুমন। ১৯৯৩ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ড ছেড়ে দিয়ে প্রথম একক প্রজেক্ট ‘সুমন ও অর্থহীন’ এ কাজ শুরু করেন। ১৯৯৭ সালের ঈদে অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়।