চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জীবন রক্ষার ওষুধকে রক্ষা করবে কে?

ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ

আলোচনাটা শুরু হয়েছিল এক সপ্তাহ আগেই। ‘ঢাকা শহরের ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা হয়’ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন ভয়ংকর তথ্য পাওয়ার পর। গণম্যাধ্যম হয়ে বিষয়টি এখন আদালতে। মঙ্গলবার এক আদেশে সারাদেশের ফার্মেসিতে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রত্যাহার ও ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।

শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিপণনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ‍নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দিতে হবে। মূলত বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থে করা রিট আবেদনে রুলসহ এই আদেশ দেন হাইকোর্ট।

আমরা এরই মধ্যে জেনেছি, বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসের একটি অনুষ্ঠানে গত ১০ জুন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার দাবি করেন, ঢাকা শহরের ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা হয়। গত ছয় মাসের বাজার তদারকির তথ্য সংগ্রহ করে এই সিদ্ধান্ত জানান তিনি।

মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত জিনিসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। সাধারণ অসুখ থেকে শুরু করে মূমুর্ষূ রোগী; সেই ওষুধ সেবন করে সুস্থ থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু জীবন বাঁচানোর ওষুধই যদি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়, তাহলে তা রোগীদেরকে আরো অসুস্থ করে তোলে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা জীবনকে সংকটাপন্নও করে তোলে।

খোদ রাজধানীর ফার্মেসিগুলোর চিত্রই যদি এমন হয়, তাহলে দেশের অন্যান্য এলাকার চিত্র বুঝতে আর কিছুর দরকার হয় না। নিশ্চিত করেই বলা যায়, সারাদেশের চিত্র আরো খারাপ। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের দেয়া তথ্য অর্ধেকটা সত্যি হলেও তা ভয়ংকর বিপর্যয়ের, আতঙ্কের।

অথচ এসব দেখার জন্য সরকারের একাধিক সংস্থা রয়েছে। তারপরও খোদ রাজধানীতে এতো এতো ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কিভাবে থাকে? ওই সংস্থাগুলোর কাজটা কি? তাদের নাকের ডগায় বছর পর বছর এসব চলে কিভাবে? তাহলে কি এর সঙ্গে তারাও জড়িত?

আমরা মনে করি, এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হবে। এর সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। সবকিছু হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। মানুষের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ জীবন বিনাশী হয়ে উঠলে তা একটি দেশের জন্য হয়ে ওঠে ভয়ংকর। আমরা আরও মনে করি অন্তত এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় এনে মানুষের জীবন রক্ষা করবে।