আগে থেকে ধারণা নিয়ে না গেলে বইমেলায় শত শত স্টলের মধ্য থেকে কাঙ্ক্ষিত স্টলটা খুঁজে বের করা বেশ কঠিন। তাই দিকশূন্য পাঠক চলে যান তথ্যকেন্দ্রে। তথ্যকেন্দ্রে বসা বাংলা একাডেমির কর্তকর্তারা কাঙ্ক্ষিত স্টল খুঁজে পাওয়ার উপায় বাতলে দেন।
অনেক সময় দিকনির্দেশনা দেওয়ার পরও স্টল খুঁজে পাওয়া যায় না। বা নির্দিষ্ট প্রকাশনীর স্টল নম্বর জানা যায় না।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী মোঃ সানাউল্লাহ জিসান চার বছর আগে বইমেলায় এসে কম্পিউটার বিষয়ক বই খুঁজতে গিয়ে এমন বিপদে পড়লেন। পছন্দের স্টল খুঁজে পেলেন না। গেলেন তথ্যকেন্দ্রে। তথ্যকেন্দ্রে দায়িত্বরত লোকজন তাকে মৌখিক নির্দেশনা দিলেন। মন ভরল না জিসানের। মনে মনে ভাবলেন, যদি ডিজিটাল পদ্ধতিতে সঠিক নির্দেশনা দিত কতই না ভালো হতো।
চিন্তা করে বসে রইলেন না তিনি। কাজ শুরু করলেন। বাংলা একাডেমির পরিচালককে জানালেন তার পরিকল্পনার কথা। বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জির সহযোগীতায় একটা সফটওয়ার বানালেন।
জিনাসের বানানো সফটওয়ারের সাহায্যে এক ক্লিকেই মেলার যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় গত তিন বছরে তার বানানো ডেস্কটপ বেজ সফটওয়ারের সাহায্যে কাজ করা হয়। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিন বছর সেই সফটওয়ার থেকেই তথ্য দেওয়া হতো। চলতি বছর মেলার শুরু থেকে আরও সহজ ও আপডেট করে সফটওয়ারটি অনলাইনেও নিয়ে আসেন জিসান।
চ্যানেল আই অনলাইনকে জিসান বলেন, ‘এখন সফটওয়ারটা অনলাইনে দেওয়া হয়েছে। যে কেউ যে কোনো স্থান থেকে মেলার যাবতীয় তথ্য পাবেন এই সফটওয়ারের মাধ্যমে। বাংলা একাডেমির সফটওয়ার থেকে মেলায় কোন স্টলের অবস্থান কোথায় সেটা ম্যাপ আকারে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন কতটি নতুন বই আসছে সেটাও সন্ধ্যার পরপরই আপলোড করা হচ্ছে।
লেখক, বইয়ের নাম, বইয়ের বিষয়, এসব দিয়ে সার্চ দিলেও মূল্য, স্টলসহ বইয়ের বিস্তারিত চলে আসছে বলে জানান জিসান।
সানাউল্লাহ জিসান আরও বলেন, পুরো ফেব্রুয়ারি মাসের ক্যালেন্ডার দেওয়া আছে সফটওয়ারে। এখানে নির্দিষ্ট একটা তারিখে ক্লিক করলেই সেই তারিখে মেলার সময়সূচি, কোথায় কোন প্রোগ্রাম হবে, কারা কারা উপস্থিত থাকবেন এমন যাবতীয় বিষয় চলে আসবে।
জিসান জানালেন পুরো বাংলা একাডেমিকেই ডিজিটালাইজেশন করার পরিকল্পনার কথা। ধীরে ধীরে বাংলা একাডেমির পুস্তক বিক্রয় থেকে শুরু করে সবকিছুই আধুনিকায়ন করা হবে।