মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর এবারই বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রথম শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।এর অংশ হিসাবে সারা দেশের ন্যায় শুক্রবার সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের নেতৃত্বে টিএসসি থেকে বিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।
শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার, নতুন কলা ভবন, ট্রান্সপোর্ট চত্বর হয়ে পুরাতন কলা ভবনে গিয়ে শেষ হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিভিন্ন অনুষদ, ইনস্টিটিউট, হল, বিভাগ, অফিস, মহিলা ক্লাব, জাবি স্কুল ও কলেজের ছাত্র-শিক্ষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, নববর্ষে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। এসময়টাতে আমরা চাই আমাদের মধ্যে যেনো সাম্প্রদায়িক বিবেধ কমে যাক। আমাদের মধ্যে যেকোন ধরণের অসমতার বোধ কমে যায়। আমরা যেনো সেই চর্চাই করতে পারি। আমাদের সকলের জন্যই পরস্পরের প্রতি পরস্পরের শুভকামনা একান্ত প্রয়োজন।
‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ প্রতিপাদ্যে এ শোভাযাত্রা থেকে এবার অকল্যাণ ও অশুভ শক্তির বিরদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবারের মতো এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রায় হরেক রঙের মুখোশ, হাতি, বাঘ, ফুল, পাখির প্রতিকৃতি ছিল। যার মাধ্যমে তুলে ধরা হয় বাংলার ঐতিহ্যকে। শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া নারীরা পরেছেন লাল, সাদা শাড়ি। হাত ভর্তি কাচের চুড়ি। চুলে বেলি ফুল। শিশুরাও সেজেছে লাল, সাদার সাজে। পুরুষদের সাজও তাই। বাংলার চিরায়ত সাজে নববর্ষ বরণ করছে সবাই।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশানুযায়ী এ বছর প্রথমবারের মতো দেশের প্রায় ৩০ হাজার সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
এ ছাড়া বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও সকল উপজেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনসহ আলোচনা সভা ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
ইউনেস্কো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রাকে স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে গুরুত্বারোপ করে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পয়লা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে চারুকলা অনুষদ থেকে বের হয় বিশ্ব ঐতিহ্যের সর্ববৃহৎ মঙ্গল শোভাযাত্রা। চারুকলা থেকে রূপসী বাংলা, শাহবাগ, টিএসসি হয়ে শোভাযাত্রাটি পুনরায় চারুবলা অনুষদে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ।