সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের হুমকির নিন্দা করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই নিন্দা জানায়।
সংগঠনের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়,‘সুপ্রিম কোর্টে স্থাপিত ভাস্কর্যকে হেফাজতীরা মূর্তি বা প্রতিমা বলছে- যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক নির্জলা মিথ্যা ছাড়া আর কিছু নয়। এই ভাস্কর্য জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বহু দেশের উচ্চতর আদালতে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। যে ইরানে ইসলামী হুকুমত ও শরিয়া আদালত বিদ্যমান রয়েছে সেখানেও উচ্চতর আদালতের দেয়ালে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘জাস্টিসিয়া’ ভাস্কর্য খোদাই করা রয়েছে।’
“হেফাজতিরা সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য অপসারণের নামে আমাদের সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সেখানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ দেশের সর্বোচ্চ এই আদালত ’৭১-এর শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে যার কয়েকটি ইতিমধ্যে কার্যকরও হয়েছে।”
এরকম হুমকির পরও সরকার কিংবা উচ্চতর আদালত এই হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল এবং সরকার উৎখাতের জন্য জামায়াত-বিএনপির সহযোগিতায় হেফাজতিরা মাদ্রাসার নিরীহ ছাত্রদের রাজধানীতে এনে যে মহাতাণ্ডব সৃষ্টি করেছিল তা ভুলে যাওয়া উচিৎ হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কতার কারণে এরপর বড় কোনও ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটালেও হেফাজত বার বার বলছে তাদের ১৩ দফা দাবি থেকে তারা সরে আসেনি।’
“প্রশাসনের অন্দরমহলে অবস্থানকারী হেফাজত-জামায়াতের অনুসারীরা একের পর এক বাংলাদেশের সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনার উপর বার বার আঘাত করছে, যার সর্বশেষ অভিব্যক্তি হচ্ছে হেফাজতের দাবিপূরণ করতে গিয়ে স্কুলের পাঠ্যসূচির সাম্প্রদায়িকীকরণ।”
হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উপস্থিতি রয়েছে জানিয়ে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির দাবি, ‘হেফাজত প্রধান আহমদ শফীসহ এই সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নেজামে ইসলামী ও ঘাতক ‘মুজাহিদ বাহিনী’র সদস্য ছিলেন। আমরা যখন এসব ঘাতক সংগঠনের বিচার দাবি করছি তখন তারা সর্বোচ্চ আদালতে হামলার হুমকি দিচ্ছে যা আমরা মেনে নিতে পারি না।’
হুমকি প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।