৮ জুলাই, ২০১৪। বিশ্বকাপের সেমিতে জার্মানির বিপক্ষে মিনেইরোতে মুখোমুখি স্বাগতিক ব্রাজিল। নেইমার ছিলেন না, তবুও বড় স্বপ্ন দেখতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি সেলেসাও সমর্থকরা। জার্মানিকে হারিয়ে ফাইনালে উঠবে ব্রাজিল, ঘুচবে ৫০ বছর পুরনো মারাকানা আক্ষেপ। সেদিন মাঠে এসেছিলেন হাজারো ব্রাজিলিয়ান।
সেই ম্যাচে যা হয়েছে, তাকে দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যেতে পারলেই বেশি খুশি হতো ব্রাজিলিয়ানরা। নিজ মাঠে জার্মানদের কাছে যেভাবে লজ্জায় নত হতে হয়েছিল, সেটা ভুলেও মনে আনতে চান না সমর্থকরা। ম্যাচের ফলাফল ৭-১, ঠাঁই করে নিয়েছে ফুটবল ইতিহাসের বড় দুর্ঘটনার তালিকায়! ব্রাজিলের কাছে যা দগদগে ঘা। মুলার, ক্লোসা, টনি ক্রুস সেদিন ফুটবল খেলেননি, খেলেছিলেন কোটি ব্রাজিলিয়ানের হৃদয় নিয়ে!
ম্যাচের ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। ক্ষত মেটেনি। জার্মানির একইরকম এক হারে সেটি ফের আলোচনায়। এবার যে শিকারি নিজেই হয়েছে শিকার। ব্রাজিলের স্থানে নাম ঢুকেছে জার্মানির, আর জার্মানি হয়েছে স্পেন। উয়েফা নেশনস কাপে মঙ্গলবার রাতে সেভিয়ার মাঠ কার্তুজা স্টেডিয়ামে জার্মানদের জালে গুণে গুণে হাফ ডজন গোল দিয়েছে স্প্যানিশরা।
খেলাটা স্পেন-জার্মানির হলেও ম্যাচে স্পেনের গোলসংখ্যা যত বাড়ছিল, আগ্রহটা বেড়েছে ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যমেও। দর্শকশূন্য মাঠে খেলা হলেও টিভি সেটের সামনে ব্রাজিলিয়ানরা সমর্থন দিয়ে গেছে স্পেনকে। স্পেনের নতুন বিস্ময়, ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড ফেররান তোরেস করেছেন হ্যাটট্রিক। তার একেকটি গোলে যেন ফেররান নন, জার্মানির জালে জড়িয়েছেন নেইমার!
ব্রাজিলে উয়েফা নেশনস কাপ সম্প্রচারের দায়িত্বে আছে টিভি নেটওয়ার্ক এস্পোর্তে ইন্টারটিভো। জার্মানি ছয় নাম্বার গোলটা হজম করার পরপরই ফেররান তোরেসের ছবি দিয়ে টুইট করেছে তারা। টুইটে লেখা একটিই কথাই, ‘গোল!’ তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।
একদিনের জন্য ব্রাজিল সমর্থকরা যেন তাদের হলুদ জার্সি ছেড়ে মনের রঙ রাঙিয়েছিলেন স্পেনের লাল রঙ্গে!