জালিয়াতি করে জামিন নেওয়ায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনের এক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মজিবর রহমান ও তার তদবিরকারক সোহাগকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার নির্দেশ দেওয়ার পর এই দু’জনকে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
এছাড়া জালিয়াতির এই ঘটনা তদন্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেনা নাজমুন নাহার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ ও শাহীন আহমেদ খান।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়: ঝালকাঠির মরিচবুনিয়া এলাকার এক বাড়ী থেকে ২০০১ সালের ৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে এক গৃহবধুকে অপহরণের ঘটনায় করা মামলায় ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ মজিবরসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ২০০৪ সালের ২৫ এপ্রিল দেওয়া এই রায়ের সময় মজিবর পলাতক ছিলেন। তবে ২০০৭ সালের ২৩ জানুয়ারি পুলিশ মজিবরকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মজিবর। কিন্তু হাইকোর্ট তার আবেদন খারিজ করে রায় দেন। তবে হাইকোর্টের এই রায়ের তথ্য গোপন করে সাজা বাতিল চেয়ে আবার হাইকোর্টে আবেদন করে মজিবর। বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত পহেলা আগস্ট মজিবরকে জামিন দেন। এরপর কারাগার থেকে মুক্তি পান মজিবর।
অন্যদিকে জামিনের আদেশটি যাচাই করতে যেয়ে দেখা যায়, জামিন আদেশ দেওয়া বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতির নাম ঠিক থাকলেও কনিষ্ঠ বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের নামের জায়গায় বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের নাম উল্লেখ রয়েছে।
বিষয়টি গোচরে আসার পর বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আইনজীবী হেনা নাজমুন নাহারকে আসামি মজিবর ও মামলার তদবিরকারক সোহাগকে হাইকোর্টে হাজির করতে নির্দেশ দেন। এই আদেশ অনুযায়ী আসামী মজিবর ও তদবিরকারককে হাজির করা হলে হাইকোর্ট তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেন।