যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি কমলেও জামালপুরে বন্যার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার ৬২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সড়কগুলো কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও রেলপথ বন্ধ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৫ হাজার ৯শ’ হেক্টর ফসলী জমি এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার গবাদি পশু।
বন্যা কবলিত এলাকায় ১১২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে, বন্যায় জেলার ১৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। এদিকে পানি কমতে থাকলেও খাবারের অভাব ও বিশুদ্ধ পানি এবং গো খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ৬০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছে ৪২হাজার ৭৩০ জন বানভাসী মানুষ। এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মারা গেছে শিশুসহ ২২ জন মানুষ।
বন্যা কবলিত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ নানা সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যাদুর্গতের সহযোগিতা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে “বানভাসি” নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
পরে তারা বন্যার্ত চারশতাধিক পরিবারকে শুকনো চিড়া, গুড়, কলা, স্যালাইন, বিস্কুট, মোমবাতি, দেশলাই, পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ফিটকিরি ও পানিবাহিত রোগের ওষুধসহ নগদ অর্থ প্রদান করে।
জামালপুরের বন্যা কবলিত বৃদ্ধা রহিমা বেগম বলেন, আমাগো ঘরে বন্যার পানি উঠছে। আমাগো সাহায্য করার জন্য আপনেরা আইছেন, আমরা খুব খুশি হইছি। আল্লাহ আপনাগো ভালা করুক।
গাইবান্ধা জেলার প্রায় সাড়ে তিনশর বেশি গ্রামের পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি হয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় বলছে, বন্যায় এ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলার দুটি পৌরসভাসহ ৫১টি ইউনিয়নের ৩৯০টি গ্রামের ৫ লাখ ১৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, যাদের ৪৫ হাজার ৪৯৫টি বসতবাড়ি পানির নিচে। এ ছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ২৩৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ৬৩ কিলোমিটার বাঁধ ও ২১টি কালভার্ট। ডুবে গেছে ১১ হাজার ৯২৮ হেক্টর বিভিন্ন ফসলি জমি।
গাইবান্ধায় বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় ভেসে গেছে ৬ হাজার ২শ’ ৯০ টি পুকুরের মাছ। চলতি বন্যায় জেলা ২ হাজার ৫৫ মেট্রিক টন মাছ ও ১ কোটি ১১ লক্ষ পোনা ভেসে গেছে। যার মূল্য ২৮ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা বলে জানালেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। সেজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে দ্রুত সরকারী পূর্নবাসন সহায়তা প্রদানের দাবি ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের।