মাতৃগর্ভে গুটিশুটি মেরে পড়ে থাকতে সন্তানের কেমন লাগে? না, তা জানা হয়তো সম্ভব নয়। তবে কল্পনায় ছোট্ট আরামদায়ক পরিবেশের চিত্র আসতেই পারে। পৃথিবীর আলো দেখতে অপেক্ষার সেই মূহুর্তগুলো উপলব্ধির সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে জাপানে!
‘অটোনামাকি’ নামের জাপানের এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতিতে ভ্রুণাবস্থায় শিশুর দেহভঙ্গিমায় কাউকে কাপড়ে মুড়িয়ে দেয়া হয়। যা অঙ্গগুলোকে শিথিল এবং পেশি সংকোচনের মতো সমস্যার উপশম করে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। সাম্প্রতিক সময়ে জাপানে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
জাপানিজ ভাষার শব্দ অটোনামাকির অর্থ অনেকটা এমন দাঁড়ায় ‘প্রাপ্তবয়স্ক মোড়ানো’। এই ধারণা এসেছে মূলত একই ভঙ্গিমায় শিশুদের কাপড়ে মুড়িয়ে রাখতে ‘ওহিনামাকি’র ব্যবহার থেকে। জাপানে প্রচলিত এই প্রথাটি শিশুদের দৈহিক বিকাশে সহায়ক বলে বিশ্বাস করা হয়। এতে শিশুরা খারাপ অনুভব করে কিনা, এমন সংশয় থেকেই অটোনামাকির প্রচলন বলে জানান কিয়োকো প্রোপর্শন এর অরি মাতসুয়ো, তার প্রতিষ্ঠানটিও গ্রাহকদের এই সেবা দিয়ে থাকে।
এই পদ্ধতিতে প্রতিটি সেশন হয় ২০ মিনিটের।
কিয়োকো প্রোপর্শনে এই চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা একজন জানান, এতে তিনি ভালো অনুভব করছেন। দেখতে আবদ্ধ মনে হলেও এটি কোন চাপের অনুভব দেয় না। তার কাঁধ ও পিঠ আরও শিথিল হয়ে উঠেছে বলেও জানান তিনি।
অটোনামাকির প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন দেশটির প্রখ্যাত ধাত্রী নোবুকো ওয়াতানাবে, যিনি প্রসূতিদের জন্য বেল্টেরও উদ্ভাবক, যা জাপানে বহুল প্রচলিত।
এই চিকিৎসা পদ্ধতি তিনি মূলত চালু করেন নারীদের জন্য। নোবুকোর মতে, এর ফলে নিতম্ব, পা এবং ঘাড়ের পেশী আরও শিথিল হয়ে উঠে।
নোবুকোর কোম্পানি ২০১৫ সালে প্রথম অটোনামাকি সেবা দেওয়া শুরু করে। এখন পর্যন্ত ৭০ জন তাদের কাছ থেকে সেবাটি নিয়েছে।
তবে এই অদ্ভুত থেরাপির বিরোধীতাও রয়েছে। হলমার্ক ফিজিওথেরাপির একজন চিকিৎসক ভিসভানাথান রবির মতে, অটোনামাকি ক্ষতিকর। এর ফলে সাময়িকভাবে না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে পেশী সংকোচনের মতো সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
“একজন ব্যক্তি যদি এভাবে ৩০ মিনিট থাকে আমি নিশ্চিত তার মেরুদন্ডে সমস্যা হবে।” বলেন তিনি।
সামাজিক মাধ্যমেও এর সমালোচনা দেখা যায়। টুইটারে কেউ একে ভীতিকর বলেও অভিহিত করেছেন।