দেশের নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজনে সেবা দিতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে জাতীয় জরুরি সেবা হেল্প ডেস্ক ৯৯৯। এই নম্বরের সাহায্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী শ্লীলতাহানির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ, বিপদের আশঙ্কায় ওই শিক্ষার্থী ৯৯৯ এ ফোন করেছিল সাহায্যের জন্য। মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।
কোনো দুর্ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়লে করণীয় সর্ম্পকে অনেকেই ভেবে পান না। এরকম পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেবা প্রচলিত আছে। যদিও সচেতনতার অভাবে নয়তো সেবার মান সর্ম্পকে সন্দিহান হওয়ায় সেগুলো ব্যবহারে জনগণের মধ্যে জড়তা দেখা যায়। তারপরেও রাষ্ট্রীয় সেবা ডিজিটালাইজড হবার কারণে ধীরে ধীরে এসব সেবা জনবান্ধব হয়ে উঠছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর ওই ঘটনা তারই প্রমাণ।
এর আগেও অবশ্য প্রভাবশালীদের কবলে পড়া পুরোনো গাছ উদ্ধারে, উঁচু দালানের কার্নিশে আটকে পড়া বিড়াল, চাঁদাবাজদের হানা থেকে রক্ষা পাওয়াসহ নানা গল্প বলার মতো পরিস্থিতি হয়েছে ৯৯৯ সেবার মাধ্যমে। ৯৯৯ ছাড়াও সেবাভেদে নানারকম জরুরি নম্বর আছে জনস্বার্থে।
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে এবং চিকিৎসকের কাছে যেতে ব্যর্থ হলে স্বাস্থ্য বাতায়নের ১৬২৬৩ এ ফোন করলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য নির্দেশনা ও পরামর্শ পাওয়া যায়। নির্যাতন প্রতিরোধে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেল’ চালু করেছে ১০৯২১। সুবিধাবঞ্চিত নির্যাতিত ও বিপদাপন্ন শিশুদের ২৪ ঘণ্টা জরুরি সহায়তা সেবা দিতে ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮। বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও আইনগত সহায়তা দিতে ১৬৪৩০ নম্বর চালু আছে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে অনেকের সমস্যার শেষ নেই, সে বিষয়ে যেকোনো তথ্যের জন্য ১০৫ নম্বরে ফোন করা যাবে। এছাড়া পানির সমস্যায় ঢাকা ওয়াসার ১৬১৬২ নম্বর। ব্যাংকিং সেবা পেতে হয়রানির শিকার হলে বা কোনো অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে জানানো যাবে ১৬২৬৩ নম্বরে। আরেকটি আলোচিত ডিজিটালাইজড সেবা হচ্ছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য জানাতে হটলাইন ১০৬, যা চালু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সেবা প্রাপ্তির মান নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে অনেক অভাব অভিযোগ থাকলেও এইসব ডিজিটালাইজড নাগরিক কিন্তু বেশ উপকারি বলে আমাদের মনে হয়েছে। ওইসব সেবায় যতো বেশি জনগণের চাপ বাড়বে, ততো ওইসব সেবার মান উন্নত হবে। একবার কোনো কারণে সেবা না পেলে ওইসব জরুরি নম্বর ব্যবহার বন্ধ করা উচিত হবে না বলে আমরা মনে করি। ধীরে ধীরে সব নাগরিক সেবাগুলো জনবান্ধব ও কার্যকর হোক, এই আমাদের প্রত্যাশা।