সাতজন ব্যাটসম্যান আগেই সাজঘরে ফিরেছেন। ক্রিজে স্বীকৃত ব্যাটসমান বলতে এক রবি ফ্রেইলিঙ্ক। শেষ ওভারে দরকার ২৪ রান। প্রথম চার বলে ১৫ নিয়ে সেই ম্যাচই কিনা জমিয়ে দিলেন সাউথ আফ্রিকান অলরাউন্ডার। কিন্তু শত চেষ্টা করেও শেষ দুই বলে ৯ রান নিতে পারলেন না। এমন জমজমাট ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করেছে সিলেট সিক্সার্স। ১৬৯ রানের টার্গেটে চট্টগ্রাম ভাইকিংস থামে ১৬৩ রানে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পূর্ণ প্রত্যাবর্তনের আগে বিপিএলকে একটা লড়াই হিসেবে নিয়েছেন দুই অস্ট্রেলিয়ান স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। প্রথম ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও অধিনায়কত্বের প্রজ্ঞায় সফল হয়েছিলেন স্মিথ। আর নিজের প্রথম ম্যাচে ভালো না করা ওয়ার্নার নিজেকে খুঁজে পেলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। প্রথমে ব্যাট হাতে এবং পরে মাঠের নেতা হিসেবে দারুণ নেতৃত্ব। তার সঙ্গে ব্যাটে নিকোলাস পুরান ও আফিফ হোসেনের পর বোলারদের যোগ্য সঙ্গ। সবমিলিয়ে সিলেটকে প্রথম জয় উপহার ওয়ার্নার বাহিনীর। চট্টগ্রাম ভাইকিংসকে তারা হারিয়েছে ৫ রানে।
১৬৯ রানের টার্গেট সামনে রেখে শুরুটা মনের মতো হয়নি ভাইকিংসদের। দলীয় ৬ রানের মাথায় আউট হন মোহাম্মদ শাহজাদ। ব্যক্তিগত ৬ রানে তাসকিন আহমেদের বলে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ হন প্রথম ম্যাচে ২৭ রান করা আফগান ওপেনার।
ওপেনিং সঙ্গী হারানোর পর মোহাম্মদ আশরাফুলকে পাশে পান ক্যামেরন ডেলপোর্ট। বেশ হাতখুলেই খেলছিলেন তিনি। কিন্তু ছোট রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান সাউথ আফ্রিকান তারকা। ফেরার আগে এক হালি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কাও মারেন প্রোটিয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
পাঁচ বছর পর বিপিএল খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচে হতাশ করেন আশরাফুল। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে আউট হয়েছিলেন মাত্র ৩ রানে। দলের দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো কিছুর আভাসই দিচ্ছিলেন। ২২ রান করলেও আশার ফুলটা পুরোপুরি ফোটাতে পারেননি। তাসকিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমান্তে সাব্বির রহমানের হাতে ধরা পড়েন।
রানের গতি ঠিক থাকলেও একই গতিতে উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। আশরাফুলের পরপরই ফিরে যান দলের অন্যতম সেরা ও নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম (৫)। অলক কাপালির বলে বিগ শট খেলতে গিয়ে আশরাফুলের মতোই সীমানায় নিকোলাস পুরানের হাতে ক্যাচ হয়ে যান।
১০ ওভারের মধ্যেই প্রথমসারির চার ব্যাটসম্যানকে হারায় চট্টগ্রাম। স্কোরবোর্ড একশ ছোঁয়ার আগে তাদের পঞ্চম ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন। অলক কাপালির বলে বোল্ড হন মোসাদ্দেক হোসেন। এই ম্যাচে ৭ রান করা মোসাদ্দেক রংপুরের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ২ রান।
অন্যদের আসা-যাওয়ার পরও ফ্রেইলিঙ্ককে সঙ্গে নিয়ে একটা চেষ্টা চালিয়েছিলেন সিকান্দার রাজা। কিন্তু ২৮ বলে সমান দুই চার ও ছক্কায় ৩৭ রান করে তাসকিনের তৃতীয় শিকার হন জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান। সিকান্দারের পর নাঈম হাসানকে ফিরিয়ে উইকেটের হালি পূরণ করেন তাসকিন।
শেষদিকে ব্যাট চওড়া করেছিলেন ফ্রেইলিঙ্ক। দলকে জয়ের প্রায় কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২৪ বলে এক চার ও চারটি বিশাল ছক্কায় ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন প্রোটিয়া অলরাউন্ডার। বল হাতে দুই ম্যাচে ৭ উইকেট নেয়া ফ্রেইলিঙ্ক ব্যাট হাতে তার কারিশমা দেখান। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই কারশিমার পূর্ণতা দিতে পারেননি।
ব্যাটসম্যানদের সফলতার দিনে বল হাতে রীতিমতো আগুন ঝরিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। দুই ওভারে ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে তাসকিনকে যোগ্য সঙ্গ দেন অলক কাপালি।
এর আগে ডেভিড ওয়ার্নার ও নিকোলাস পুরানের ফিফটির সঙ্গে আফিফ হোসেনের ৪৫ রানে ভর করে ৫ উইকেটে ১৬৮ রান করে সিলেট সিক্সার্স।