জোফ্রেড ও র্যালফ্রেড গ্রেগোরি দুই যমজ ভাই। ১৯৯৭ সালের ২৩ এপ্রিল তাদের জন্ম। এবছর এপ্রিলে এই যমজ ২৪তম জন্মদিন উদযাপন করেছে। জন্মদিনের একদিন পরে তারা দুজনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়। গত সপ্তাহে দুই ভাই কয়েক ঘণ্টার ব্যাবধানে উত্তর প্রদেশের মিরাট এর হাসপাতালে মারা যায়।
জোফ্রেড ও র্যালফ্রেড গ্রেগোরির মা-বাবা দুজনেই স্কুল শিক্ষক। গত ১৩ মে বেসরকারি আনন্দ হাসপতাল থেকে তাদের জানানো হয় জোফ্রেড গ্রেগোরি মারা গেছে। এ খবর শুনে শিক্ষক দম্পতির পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যায়।
একই হাসপাতালে তখন র্যালফ্রেড গ্রেগোরিও চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে থেকে সে বড় ভাই নেলফ্রেডকে ফোন করে জন্মদিনের শুভচ্ছা জানাতে। সে সময় মায়ের কাছে যমজ ভাইয়ের খবর জানতে চায়। মা জানান, জোফ্রেডকে দিল্লীর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ কথা শুনে র্যালফ্রেড বলে, মা তুমি আমাকে মিথ্যা বলছো। ফোনে কথা বলার পরদিন র্যালফ্রেডও মারা যায়।
ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে এই দুই যমজের খবরটি সবচেয়ে মর্মান্তিক হয়ে নাড়া দিচ্ছে মানুষকে।
এই দুই ভাইয়ের জন্ম ৩ মিনিটের ব্যবধানে। জন্মের পর থেকে তারা সবসময় সব কাজ একইসঙ্গে করে থাকে। একই পোশাক পরে। দুজনের উচ্চতা ৬ ফুট। একই সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেছে। পড়াশুনা শেষে দুজনের কর্মজীবন শুরু করেছে। দুজনের দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পরিবারের তিন ভাইয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা, ভাব-ভালোবাসাও ছিলো খুব।
জোফ্রেড মিরাট এ অবস্থান করছিলো। অফিসের কাজ করছিলো বাসা থেকেই। হাতে চোট পাওয়ার কারণে র্যালফ্রেড হায়দরাবাদ থেকে চিকিৎসা ছুটি কাটাতে বাসায় এসেছিলো।
দুই ভাইয়ের জ্বর আসলে তারা বাসা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলো। পরিস্থতি খারাপ হলে পহেলা মে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মে মাসের ১০ তারিখে তারা দুজনেই করোনা নেগেটিভ হয়। এতে পরিবারের সবাই উচ্ছ্বসিত হয়।
এর তিন দিন পর জোফ্রেড মারা যায়। জোফ্রেডের বাবা বলেন, আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলছিলো র্যালফ্রেডও বাঁচবে না। কারণ, তাদের আত্মাকে আলাদা করা সম্ভব না।