২১ জানুয়ারি থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ফিজআপ চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৭’র গ্র্যান্ড ফিনালে। সেরাকণ্ঠের ষষ্ঠ আসরে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ঢাকার সুমনা ও সুনামগঞ্জের ঐশি।
থাইল্যান্ড থেকে ফিরে সুমনা এসেছিলেন চ্যানেল আই ভবনে। তার সঙ্গে কথোপকথনে চ্যানেল আই অনলাইন-এর কাছে বললেন অনেক কথা।
সুমনার গান শেখার শুরু পাঁচ বছর বয়সে, যখন তিনি পড়েন কেজি ক্লাসে। অবশ্য গানের প্রতি ঝোঁক আরও অনেক আগে থেকে। চার বছর বয়স থেকেই বাবা-মা’র ক্যাসেট প্লেয়ারে ক্যাসেট ঢুকিয়ে গান শুনতেন নিজে নিজেই। মিতালী মুখার্জি আর রুনা লায়লার গান শুনে শুনে নিজে গাওয়ার চেষ্টা করতেন খুব।
ছোটবেলা থেকেই সুমনাকে শান্ত করার উপায় ছিল গান। জানালেন, খুব চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করলে একমাত্র গান ছাড়লেই নাকি সঙ্গে সঙ্গে চুপ হয়ে যেতেন সুমনা, এই কথা তার মায়ের মুখে শুনেছেন বহুবার।
‘ফিজআপ চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ-২০১৭’র অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গিয়ে সুমনা জানান, তুমুল বৃষ্টি, জ্যাম পেরিয়ে বাবার সাথে এসেছিলেন প্রথম অডিশনের দিন। লালনের গান গেয়ে প্রথম রাউন্ড পার করে সেদিনই ২য় রাউন্ডে পৌঁছে যান সুমনা। মিতালী মুখার্জির ‘তোমার চন্দনা মরে গেছে’ গেয়ে বিচারকদের মন জয় করে প্রবেশ করেন ৩য় রাউন্ডে। বাদ পড়ে যাবার ভয় নিয়েই পার করেন এই রাউন্ডও।
গ্র্যান্ড অডিশনে মূল বিচারকদের সামনে প্রথমবারের মতো গান গেয়ে প্রথমদিনই পেয়েছেন বিচারকদের স্ট্যান্ডিং ওভেশন।
এরপর ক্যাম্প রাউন্ডে এসে নতুন সব অনুভূতি। নতুন মানুষদের সঙ্গে এক সাথে থাকার অভিজ্ঞতাও দারুণ বললেন সুমনা। ক্যাম্পের প্রশিক্ষণের সাথে সাথে কখন যেন পৌঁছে গেছেন সেরা ১২ তে।
চ্যাম্পিয়ন হবেন সেটা কল্পনার বাইরে ছিল। সেরা ১২তে এসেই দারুণ খুশি ছিলেন ঢাকা মোহাম্মদ প্রিপারেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা। বিচারকদের প্রতি প্রচণ্ড কৃতজ্ঞতা তার। প্রত্যেক বিচারক তাদেরকে বাবা-মায়ের মতো স্নেহ দিয়েছেন, তাদের প্রতিটি গান নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন, যত্ন নিয়ে শিখিয়েছেন। এমনটাই জানালেন তিনি।
তবে সুমনা সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ তার নিজের ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর কাছে। ছয় বছর ধরে তার কাছে গান শিখছেন সুমনা। ক্যাম্পের ফাঁকেও যখনই সময় পেয়েছেন, তখনই ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীকে ফোন করে তার আশীর্বাদ নিয়েছেন।
ভবিষ্যতে গান নিয়েই থাকতে চান সুমনা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মর্যাদা ধরে রাখা বেশি কষ্টের এটা এখনই বুঝে গেছেন। সবার আশীর্বাদ নিয়ে গানের সাথে নিজেকে সারাজীবন সংশ্লিষ্ট রেখে পথ চলতে চান এবারের ‘ফিজআপ-চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ’র এই বিজয়ী।
ছবি: জাকির সবুজ